
শুক্রবার (১০ অক্টোবর) রাতে সদর উপজেলার খড়িবিলা মোড় এলাকায় বিশেষ অভিযানে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
এ সময় তার সহযোগী মুছাঈদ আলম ওরফে ক্যামেলকেও গ্রেপ্তার করা হয়।
অভিযানে অনলাইন জুয়া পরিচালনার কাজে ব্যবহৃত ১৬টি মোবাইল ফোন, ৩টি ল্যাপটপ এবং বিভিন্ন ডিজিটাল উপকরণ জব্দ করা হয়েছে।
শনিবার (১১ অক্টোবর) দুপুরে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম এক সংবাদ ব্রিফিংয়ে বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে শুক্রবার রাতে ডিবি ও সদর থানার যৌথ দল খানপুর থেকে বাইপাসগামী খড়িবিলা মোড়ে চেকপোস্ট বসায়।
সন্দেহভাজন একটি অটোরিকশা থামিয়ে তল্লাশি চালালে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত দুই ব্যক্তিকে আটক করা হয়।
গ্রেফতার আসামি মুর্শিদ আলম লিপু মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর উপজেলার শিবপুর গ্রামের জিনারুল ইসলাম ও রাজিয়া সুলতানা দম্পতির ছেলে। তার সহযোগী মুছাঈদ আলম (৩০) মেহেরপুর সদর উপজেলার খন্দকারপাড়া এলাকার মাসুদুল আলম ও লুবা ইয়াসমিনের ছেলে।
পুলিশ জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে তারা স্বীকার করেছে যে, তারা দীর্ঘদিন ধরে অনলাইন জুয়ার মাধ্যমে বিভিন্ন শ্রেণি-পেশার মানুষকে প্রলোভন দেখিয়ে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছিল। তাদের পরিচালনায় দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে সক্রিয় ছিল একাধিক জুয়ার প্ল্যাটফর্ম।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, মুর্শিদ আলম লিপুর নামে আগেও ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনে মামলা রয়েছে।
২০২১ সালের ১৪ নভেম্বর ঢাকার পল্টন থানায় তার বিরুদ্ধে মামলা দায়ের হয় (এফআইআর নং-৩৭/৫৭৩)।
পুলিশ সুপার মোহাম্মদ মনিরুল ইসলাম বলেন, দেশব্যাপী অনলাইন জুয়া ও ডিজিটাল প্রতারণা রোধে আমাদের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
সাতক্ষীরা জেলার বিভিন্ন এলাকাতেও নজরদারি বাড়ানো হয়েছে।
এর আগে, মেহেরপুরে তার নিজ বাড়িতে অস্ত্র ও অনলাইন জুয়ার সরঞ্জামের সন্ধানে যৌথবাহিনী চার দফা অভিযান চালালেও তাকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি। পরে সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ তাকে ধরতে সক্ষম হয়।
উল্লেখ্য, চলতি বছরের ২২ জানুয়ারি একটি জাতীয় দৈনিকে ‘রাজধানী মেহেরপুর, হেডকোয়ার্টার রাশিয়া’ শিরোনামে প্রকাশিত প্রতিবেদনে মুর্শিদ আলম লিপুকে দেশের অনলাইন জুয়ার অন্যতম হোতা হিসেবে তুলে ধরা হয়।
প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, তিনি বিদেশে অবস্থানরত একটি চক্রের হয়ে দেশে জুয়ার সার্ভার ও আর্থিক লেনদেন নিয়ন্ত্রণ করতেন।
সিআইডির অর্গানাইজড ক্রাইম বিভাগ সূত্রে জানা যায়, দেশের শীর্ষ ১৯ জন অনলাইন জুয়া এজেন্টের বিরুদ্ধে মানি লন্ডারিং অনুসন্ধান চলছে যাদের মধ্যে মুর্শিদ আলম লিপুর নাম শীর্ষে রয়েছে।
পুলিশের অপরাধ তদন্ত বিভাগ (সিআইডি) ২০২১ সালে অনলাইন জুয়ার সঙ্গে জড়িত ৯ জনকে গ্রেফতার করা হয়, যাদের মধ্যে লিপুও ছিলেন।
সে সময়ই প্রথমবার জনসম্মুখে আসে বাংলাদেশের অনলাইন জুয়ার ভয়াবহ চিত্র এবং এর পেছনের আন্তর্জাতিক নেটওয়ার্কের তথ্য।
সাতক্ষীরা জেলা পুলিশ জানিয়েছে, লিপুর বিরুদ্ধে নতুন করে একটি মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে।
জব্দ করা মোবাইল ও ল্যাপটপগুলো ফরেনসিক পরীক্ষার জন্য পাঠানো হবে, যাতে অনলাইন জুয়ার অর্থ লেনদেন ও সংশ্লিষ্ট নেটওয়ার্ক চিহ্নিত করা যায়।
