দুপুর ১টার দিকে আইনজীবীদের একটি মিছিল আদালত পাড়ার বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে।
এসময় আইনজীবী সাইফুল হত্যায় জড়িত থাকার অভিযোগে ইসকনকে নিষিদ্ধের দাবি তোলা হয়। একই সঙ্গে সংগঠনটির বিরুদ্ধে উগ্র কার্যকলাপের অভিযোগ তুলে নানা স্লোগান দেন আইনজীবীরা।
এর আগে আইনজীবীদের সমাবেশে বক্তারা বলেন, ঘটনার দিন পুলিশ ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সকাল থেকে নীরব ছিল। তাদের নিষ্ক্রিয়তার সুযোগ নিয়ে চিন্ময় কৃষ্ণের অনুসারীরা আদালতে জড়ো হয়। তারা আদালত পাড়ায় মসজিদসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা করে। এর প্রতিবাদ জানালে আইনজীবীদের ওপর চড়াও হয় ইসকন অনুসারীরা। একপর্যায়ে অ্যাডভোকেট সাইফুলকে নির্মমভাবে কুপিয়ে এবং পিটিয়ে হত্যা করা হয়।
চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন পুলিশ (সিএমপি) কমিশনারকে আল্টিমেটাম দিয়ে আইনজীবী নেতারা বলেন, ঘটনার সময় পুলিশ যথাযথ ব্যবস্থা নিলে এত বড় ঘটনা হতো না। এটি পুলিশের ব্যর্থতা। দ্রুত সময়ের মধ্যে আইনজীবী সাইফুলের খুনিদের গ্রেপ্তার করা না হলে আপনি পদে থাকতে পারবেন না।
এদিকে, চট্টগ্রাম জেলা আইনজীবী সমিতির ডাকে বৃহস্পতিবার দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মবিরতি পালিত হচ্ছে। আদালতে কোনো প্রকার কার্যক্রম পরিচালিত হচ্ছে না। কোনো বিচারক এজলাসে বসেননি। এর আগে বুধবারও কর্মবিরতি পালিত হয়েছিল।
উল্লেখ্য, গত ২৫ নভেম্বর ঢাকার শাহজালাল বিমানবন্দর থেকে গ্রেপ্তার করা হয় সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে।
পরদিন (মঙ্গলবার) চট্টগ্রামের কোতোয়ালি থানায় দায়ের হওয়া রাষ্ট্রদোহ মামলায় গ্রেপ্তার দেখিয়ে তাকে আদালতে হাজির করা হয়।
আদালত জামিন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠানোর নির্দেশ দেন।
এ ঘটনায় আদালত পাড়ায় বিক্ষোভ শুরু করেন ইসকন অনুসারীরা। এসময় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ান তারা। দুপুরের পর বিক্ষোভকারীরা ছত্রভঙ্গ হয়ে আদালত এলাকায় মসজিদ-দোকানসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানে হামলা চালায়। এসময় বেশ কয়েকটি মোটরসাইকেল ভাঙচুর করা হয়।
একপর্যায়ে বিকেলে আদালতের প্রধান ফটকের বিপরীতে রঙ্গম কনভেনশন হলের গলিতে একদল ইসকন অনুসারীর হাতে খুন হন রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম।
বুধবার চট্টগ্রাম শহরে দুই দফা এবং লোহাগাড়া উপজেলায় দুই দফা জানাজা শেষে পারিবারিক কবরস্থানে আইনজীবী সাইফুলকে দাফন করা হয়।