শুক্রবার (২৯ নভেম্বর) রাতে যশোর শহরে প্রথম পথসভায় তিনি এসব কথা বলেন।
জুলাই-আগস্ট বিপ্লবের কথা তুলে ধরে ডা. শফিকুর রহমান বলেন, আমাদের সন্তানেরা একটি বৈষম্যহীন সমাজের জন্য গুলির সামনে বুক পেতে দিয়েছিল।
আমরাও সেই বৈষম্যহীন দেশ গড়ে তুলতে চাই। আমরা এমন একটি বাংলাদেশ গড়তে চাই, যে বাংলাদেশে মানুষের মধ্যে জাতপাত দল ধর্মের ব্যবধান থাকবে না। সমস্ত মানুষ তার সব বৈধ অধিকার ভোগ করবে।
জামায়াত আমির বলেন, শ্রমিক তার অধিকার ভোগ করবে। কৃষক তার অধিকার পাবে। সে তার ফসলের ন্যায্যমূল্য পাবে। আবার অফিস আদালত কোট কাচারিতে যারা কাজ করেন, তারা জনগণের আমানতের ব্যাপারে আল্লাকে ভয় করবেন। অফিস আদালতে কোনো ঘুষ দুর্নীতি থাকবে না ইনশাআল্লাহ।
ডা. শফিকুর রহমান উল্লেখ করেন, ২০২৪ সালের এই যুদ্ধে নির্দিষ্ট কোনো দল, কোনো ধর্ম এবং কোনো লিঙ্গের মানুষেরা যুদ্ধ করেনি। কোলের শিশুরা শহীদ হয়েছে।
বৃদ্ধরা শাহাদাত বরণ করেছে। তাদের সাথে কাঁধে কাঁধ মিলিয়ে আমরাও লড়াই করেছি। আমাদের এই জাতীয় ঐক্য ধরে রাখাতে হবে। কেউ যেন ফাঁকতালে ঢুকে এই ঐক্য নষ্ট না করতে পারে। এজন্য আপামর ছাত্র-জনতাকে এবং সমস্ত বাংলাদেশের মানুষকে সজাগ থাকতে হবে।
শফিকুর রহমান বলেন, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী একটি মজলুম দল। এই দলের শীর্ষ নেতাকে বিচারের নামে হত্যা করা হয়েছে। কোরআনোর পাখি মাওলানা দেলাওয়ার হোসাইন সাঈদী রাহিমাহুল্লাকে হত্যা করা হয়েছে। জননেতা গোলাম আজম রাহিমাহুল্লাহে হত্যা করা হয়েছে। হত্যা করা হয়েছে মাওলানা মতিউর রহমান নিজামীকে। হত্যা করা হয়েছে আপনাদের কৃতি সন্তান জামায়াতের সেক্রেটারি জেনারেল আলী আহসান মুজাহিদকে। হত্যা করা হয়েছে আবদুল কাদের মোল্লাকে, হত্যা করা হয়েছে আমার ভাই কামারুজ্জামানকে।
জামায়াত আমির বলেন, বাংলাদেশের সর্বত্র কারারুদ্ধ করে রাখা হয়েছিল। আমাদের বৈধ অফিসে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। আমাদের দলকে শেষ পর্যন্ত নিষিদ্ধ করা হয়েছে। আল্লাহর ফয়সালা ভিন্ন ছিল। যারা এই বাংলার জমি থেকে ইসলামী সংগঠন জামায়াতে ইসলামী এবং ইসলামী ছাত্র শিবিরকে চিরতরে নির্মূল করতে চেয়েছিল। রাব্বুল আলামিন আজ তাদের নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। এটা আমাদের কোনো কৃতিত্ব নয়। সমস্ত কৃতিত্ব আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের।
ডা. শফিক বলেন, আমরা আমাদের কর্মীদের বলেছিলাম, আপনারা উল্লাস করবেন না। কারো ওপর হাত তুলবেন না। তার আমাদের কথা রেখেছিল। আমাদের সহকর্মীদের ওপর এত নির্যাতন করা হয়েছে। আমাদের অন্তরে অনেক কষ্ট।
যশোর প্রসঙ্গে তিনি বলেন, যশোর ঐতিহ্যবাহী এবং আন্দোলন-সংগ্রামের এলাকা। সুদীর্ঘ সংগ্রামের এলাকা। এই এলাকা থেকে সর্বপ্রথম একটি দেশের আগ্রাসনের বিরুদ্ধে নবম ডিভিশনের সেক্টরের কামান্ডার মেজর এম এ জলিল সঙ্গীদের নিয়ে লুটেরাদের বিরুদ্ধে প্রথম আন্দোলন গড়ে তুলেছিলেন। তাই এই যশোরকে আমরা অন্য উচ্চতায় দেখি।
এরপর দ্বিতীয় পথসভা করেন যশোর-বেনাপোল মহাসড়কের ঝিকরগাছা বাজার এলাকায়। সব শেষ তিনি পথসভায় বক্তব্য দেন শার্শা উপজেলার নাবারুণ মোড়ে।
সভা শেষে রাতেই তিনি রওয়ানা দেন সাতক্ষীরার উদ্দেশে।