বিপিএলের ফাইনালের ইতিহাসে সর্বোচ্চ লক্ষ্য দিয়েছিল চিটাগাং। তাতেই এক যুগ পর ফিরে আবারও শিরোপারস্বপ্ন দেখেছিল দলটি। কিন্তু সেই লক্ষ্যকে মামুলি বানিয়ে টানা দ্বিতীয়বার শিরোপা ঘরে তুলেছে তামিম ইকবালের ফরচুন বরিশাল।
এর আগে বিপিএলে সর্বোচ্চ ১৭৬ রানের লক্ষ্য তাড়ায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ার রেকর্ড ছিল।
২০২৩ আসরের ফাইনালে সিলেট স্ট্রাইকার্সকে হারানোর পথে সেই রেকর্ড গড়েছিল কুমিল্লা ভিক্টোরিয়ান্স।
একাদশ বিপিএলের ফাইনালে সেটা ছিল ১৯৫ রান। সেটিকেও ছাড়িয়ে ইতিহাসটা তাদের করে নিয়েছে তামিমের দল।
শুক্রবার (৭ ফেব্রুয়ারি) মিরপুর শের-ই বাংলা স্টেডিয়ামে প্রথমে ব্যাটিংয়ে নেমে ৩ উইকেটে ১৯৪ রান সংগ্রহ করে চিটাগাং। লক্ষ্য তাড়ায় অধিনায়ক তামিম ঝোড়ো শুরু এনে দেন। এরপর শরিফুল দুই দফায় ব্রেকথ্রু দিলেও চূড়ান্ত সাফল্য পাননি বন্দর নগরীর দলটি। নাটকীয় এক ম্যাচে ৩ বল এবং ৩ উইকেট হাতে রেখেই জয়ের বন্দরে নোঙ্গর করে ফরচুন বরিশাল।
অন্যদিকে এক যুগ পর বিপিএলে ফিরে আরও একবার স্বপ্নভঙ্গ হয়েছে চিটাগাংয়ের। নিজেদের সবশেষ আসরে অর্থাৎ ২০১৩ সালে ফাইনালে উঠলেও ঢাকা গ্লাডিয়েটর্সের কাছে শিরোপা খোয়াতে হয়েছিল তাদের।
শিরোপা জিততে শেষ ২৪ বলে ৩২ রান প্রয়োজন ছিল বরিশালের। উইকেটে তখনও মেয়ার্স এবং মাহমুদউল্লাহ রিয়াদ। মাঠে নামার অপেক্ষায় ছিলেন মোহাম্মদ নবি, রিশাদ হোসেনরা। এমন ব্যাটিং অর্ডার থাকায় সমীকরণটা খুব বেশি কঠিন হওয়ার কথা ছিল না বরিশালের জন্য। এমন সময় একই ওভারে ‘জীবন’ পেয়েছেন মেয়ার্স ও মাহমুদউল্লাহ। বল হাওয়ায় ভাসলেও চিটাগংয়ের কোন ফিল্ডারই সেটা লুফে নিতে পারেননি। যদিও দুটি ক্যাচ ছিল নো ম্যানস ল্যান্ডে।
যদিও পরের ওভারে ৪৬ রানের ইনিংস খেলা মেয়ার্সকে বিদায় করেন শরিফুল। একই ওভারে মাহমুদউল্লাহকে ফিরিয়ে চিটাগংকে ম্যাচে ফেরান বাঁহাতি এই পেসার। ১২ বলে ২০ রানের সমীকরণ মেলাতে গিয়ে রিশাদকে রেখে ১৯তম ওভারে আউট হয়েছেন নবি। ফলে শেষ ওভারে বরিশালের প্রয়োজন ছিল ৮ রান। হুসাইন তালাতের প্রথম বলেই ছক্কা মেরে বরিশালকে জয়ের খুব কাছে নিয়ে যান রিশাদ। পরের বলে সিঙ্গেল নিয়ে দুই দলের রান সমান করেন ডানহাতি এই ব্যাটার।
এমন অবস্থায় এক বল ডট দেন তানভীর ইসলাম। যদিও পরের বলে ওয়াইড দিয়ে বরিশালের জয় নিশ্চিত করেন তালাত।
এর আগে টস হেরে আগে ব্যাট করতে নামে চিটাগাং। নেমেই বরিশালের বোলারদের ওপর চড়াও হন দুই ওপেনার। তুলে নেন দলীয় সেঞ্চুরি। যা বিপিএল ফাইনালের ইতিহাসে প্রথম।
৩০ বলে ফিফটির দেখা পান ইমন। আর নাফের লাগে ৩৭ বল। ৭৬ বলে ১২১ রানের এই দারুণ জুটি ভাঙেন এবাদত হোসেন। ৪৪ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ৬৬ রান করে সাজঘরে ফেরেন নাফে।
নাফের বিদায়ের পর ক্রিজে আসা গ্রাহাম ক্লার্ককে সঙ্গে নিয়ে রানের চাকা সচল রাখেন ইমন। মারমুখী ব্যাটিং করতে থাকেন ক্লার্ক। ইমনকে সঙ্গে নিয়ে ৭০ রানের জুটি গড়েন তিনি। তবে দলীয় ১৯১ রানে ২৩ বলে ৪৪ রান করে আউট হন ক্লার্ক। তার বিদায়ের পর একই ওভারে ২ বলে ২ রান করে ফেরেন শামীম পাটোয়ারিও।
তবে থেকে যান ইমন। শেষ পর্যন্ত তার ৪৯ বলে ৬ চার ও ৪ ছক্কায় ৭৮ রানের অপরাজিত ইনিংসে নির্ধারিত ২০ ওভারে ৩ উইকেটে ১৯১ রান সংগ্রহ করতে সক্ষম চিটাগাং। বরিশালের হয়ে মোহাম্মদ আলি ও এবাদত হোসেন নেন ১টি করে উইকেট নেন।
সংক্ষিপ্ত স্কোর
চিটাগং কিংস- ১৯৪/২ (২০ ওভার) (ইমন ৭৮*, নাফে ৬৬, ক্লার্ক ৪৪; মোহাম্মদ আলী ১/২১)
ফরচুন বরিশাল- ১৯৫/৭ (১৯.৩ ওভার) (তামিম ৫৪, হৃদয় ৩২, মেয়ার্স ৪৬, রিশাদ ১৮*; শরিফুল ৪/৩৪, নাঈম ২/১৮)