দেশের একমাত্র চারদেশীয় (বাংলাদেশ, ভারত, নেপাল ও ভুটান) স্থলবন্দর বাংলাবান্ধা। এই বন্দরটি চারদেশের সংযোগ হওয়ায় ট্রানজিট ও ইমিগ্রেশন সুবিধা থাকায় ব্যবসা-বাণিজ্যে ও পর্যটনে বিপুল সম্ভাবনা রয়েছে। তবে বন্দরটিতে বেশির ভাগ পাথর আমদানি হলেও দিনদিন বাড়ছে বিভিন্ন পণ্য আমদানি। এই বন্দরটি দিয়ে বর্তমানে পেয়াজ আমদানি হচ্ছে।
পেঁয়াজ আমদানি বিষয়টি নিশ্চিত করে বাংলাবান্ধা ল্যান্ডপোর্ট লিমিটেডের ম্যানেজার আবুল কালাম আজাদ বলেন, আমাদের চারদেশীয় বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরটিতে পাথর আমদানির পাশাপাশি এখন পেয়াজ ও আতপ চাল আমদানি করা হচ্ছে।
তিনি বলেন, গত ১০ ডিসেম্বর ভারত থেকে বন্দরটিতে ৩০ মেট্রিক টন পেয়াজ আমদানি করেছে মেসার্স বিসমিল্লাহ বাণিজ্যলয় নামের একটি আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান। এর আগে এ প্রতিষ্ঠানটি ৭ ডিসেম্বর ৩০ মেট্রিক টন, ৩ ডিসেম্বর ৩০ মে.টন, ২৭ নভেম্বর ৩০ মে.টন. ২০ নভেম্বর ৩০ মে.টন ও ১৮ নভেম্বর ৩০ মে.টন পেয়াজ একই আমদানিকারক প্রতিষ্ঠান পেয়াজগুলো আমদানি করেছেন।
বর্তমানে বন্দরটি আমদানিকৃত পণ্যগুলোর মধ্যে প্রায় ৯৮ শতাংশই পাথর। এ ছাড়া মসুর ডাল, গম, ভুট্টা, চিরতা, হাজমলা, যন্ত্রপাতি, প্লাস্টিকদানা, রেললাইনের স্লিপার, খইল, আদা ও চিটাগুড় আমদানি করা হয়। এসব পণ্যের পাশাপাশি বর্তমানে পেয়াজ ও আতম চাল আমদানিতে প্রসার বাড়তে শুরু করেছে ব্যবসা-বাণিজ্যে।
অপরদিকে বাংলাদেশ থেকে ভারত ও নেপালে পাট, ওষুধ, প্রাণ ও ওয়ালটনের পণ্য, জুস, মোটরসাইকেল, ব্যাটারিসহ নানা ধরনের পণ্য রপ্তানি হচ্ছে।
ভারত-বাংলাদেশের সম্পর্কের টানাপোড়নের মধ্যেও ভারত থেকে চাল ও পেয়াজ আমদানি হচ্ছে। স্বাভাবিক রয়েছে স্থলবন্দরের আমদানি-রপ্তানী।
১৯৯৭ সালে নেপালের সঙ্গে এক বাণিজ্য চুক্তির মাধ্যমে প্রথম আমদানি-রপ্তানি শুরুহয়। ২০১১ সালে ভারতের সঙ্গে ও ২০১৭ সালে ভুটানের সঙ্গে পণ্য আমদানি-রপ্তানি শুরু হয়। বর্তমানে বন্দরটি দিয়ে প্রতিদিন হাজার হাজার মেট্রিক টন পাথর আমদানি হচ্ছে। প্রায় ১০ একর জায়গা জুড়ে এ স্থলবন্দরটি। বর্তমানে আমদানির পরিধি বৃদ্ধি পাওয়ায় বন্দরের ৩ লাখ বর্গফুটের ইয়ার্ডে দেখা দিয়েছে জায়গা সংকুলান।
বন্দরের কাস্টমস সূত্রে জানা যায়, বন্দরটিতে ব্যবসা-বাণিজ্যে সচল থাকায় আয় হচ্ছে রাজস্ব। গেল অর্থবছরে (২০২৩-২৪) বন্দরটি দিয়ে ৭৩ কোটি ৬৯ লাখ টাকা রাজস্ব আয় হয়। চলতি ২০২৪-২৫ অর্থবছরে লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে ৩৯ কোটি ৫৩ লাখ টাকা। আর সেপ্টেম্বর পর্যন্ত আয় হয়েছে ২০ কোটি ৩০ লাখ টাকা।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর সিএন্ডএফ সদস্য আব্দুল্লাহ আল মুসা ও বিসমিল্লাহ বাণিজ্যলয় এর পাবেল জানান, আমরা ভারত থেকে পেয়াজ আমদানি করছি। তবে নিয়মিত নয়, মাঝে মাঝে আমদানি করা হচ্ছে। আমাদের স্থলবন্দরটি চারদেশীয় হওয়ায় ব্যবসা-বাণিজ্যে অপার সম্ভাবনা তৈরি করেছে।
বাংলাবান্ধা স্থলবন্দর আমদানি-রফতানীকারক গ্রুপের আহবায়ক রেজাউল করিম শাহিন বলেন, ভৌগলিক অবস্থানগত দিক থেকে বাংলাবান্ধা স্থলবন্দরটি দেশের অন্যান্য স্থলবন্দরের তুলনায় গুরুত্বপূর্ণ। বন্দরটি দিয়ে পাথরের পাশাপাশি চাল ও পেয়াজ আমদানি হচ্ছে।
এ পোর্ট দিয়ে যাতে আরও কিছু আমদানি করা যায় সে বিষয়গুলো নিয়ে আমরা ব্যবসায়ীদের সাথে কথা বলছি ও উদ্বুদ্ধ করছি।