বাংলাদেশ সনাতন জাগরণ মঞ্চের মুখপাত্র চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারী রাষ্ট্রদ্রোহী মামলায় আটক হয়ে কারাবন্দি আছেন পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে। নিম্ন আদালতে জামিন না মিললেও অবশেষে উচ্চ আদালত জামিন দিয়েছেন তাঁকে। কারামুক্তিতে বাধা না থাকলেও কাগজপত্রের প্রক্রিয়া শেষ হতে অন্তত লাগবে সপ্তাহখানের। এরপরই চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারের চার দেয়াল ছেড়ে বেরোবেন ভিআইপি এই বন্দি। তবে, এই পাঁচ মাস কারাভোগে চিন্ময় দাসের ওজন কমেছে প্রায় ৭ কেজি।
শারীরিক অবস্থা ভালো নেই-জানিয়েছেন তাঁর আইনজীবী।
বুধবার (৩০ এপ্রিল) বিচারপতি মো. আতোয়ার রহমান ও বিচারপতি মো. আলী রেজার হাইকোর্ট বেঞ্চ চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের জামিন মঞ্জুর করে রায় দেন। আদালতে চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের পক্ষে ছিলেন আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।
রাষ্ট্রপক্ষে ছিলেন অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল ব্যারিস্টার অনীক আর হক ও আব্দুল জব্বার ভূঁইয়া।
আইনজীবী অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য আজ বিকেলে বলেন, ‘আজকের এই জামিন আদেশের ফলে চিন্ময় কৃষ্ণ দাস ব্রহ্মচারীর কারামুক্তিতে কোনো বাধা নেই। তবে হাইকোর্ট থেকে অর্ডারটি (আদেশ) নিম্ন আদালতে যাবে। এরপর সেখান থেকে কারাগারে গেলে তিনি মুক্তি পাবেন। হয়তো সপ্তাহখানেক সময় লাগতে পারে।’
এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘গত পরশু ওনার (চিন্ময়) মা এবং আমি দেখা করেছিলাম। উনি মোটামুটি ভালো আছেন। তবে শরীরটা আগের চেয়ে নষ্ট হয়ে গেছে। প্রায় ৭ কেজি ওজন কমেছে। আমি ওইদিনই আশ্বাস দিয়েছিলাম জামিন হবে তাঁর।’
গত বছরের ২৫ অক্টোবর চিন্ময় কৃষ্ণ দাসের নেতৃত্বে চট্টগ্রামে সনাতনী সম্প্রদায়ের একটি বড় সমাবেশ হয়। এর কয়েকদিন পর গত ৩১ অক্টোবর তার বিরুদ্ধে জাতীয় পতাকা অবমাননার অভিযোগে রাষ্ট্রদ্রোহের মামলা হয়। এ মামলায় আরও ১৮ জনকে আসামি করা হয়। একই বছরের ২২ নভেম্বর চিন্ময়ের নেতৃত্বে রংপুরে আরও একটি বড় সমাবেশ হয়। এরপর রাষ্ট্রদ্রোহের সেই মামলায় চিন্ময় কৃষ্ণ দাসকে ২৫ নভেম্বর ঢাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
পরদিন তার জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর আদেশ দেন চট্টগ্রামের আদালত। সেদিনই চিন্ময় দাসের আইনজীবীরা ওই আদেশের বিরুদ্ধে রিভিশন চেয়ে আবার জামিন আবেদন করেছিলেন। তার জামিন ঘিরে সংঘর্ষে জড়ান চিন্ময়ের ভক্তরা। তবে সংঘর্ষের সময় সাইফুল ইসলাম আলিফ নামে একজন আইনজীবীকে পিটিয়ে ও কুপিয়ে হত্যা করে দুর্বৃত্তরা।
গত ২ জানুয়ারি চিন্ময় দাসের জামিন আবেদন নামঞ্জুর করেন চট্টগ্রামের মহানগর দায়রা জজ আদালত। এরপর হাইকোর্টে চিন্ময় দাসের পক্ষে জামিন আবেদন করেন সাবেক ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল অপূর্ব কুমার ভট্টাচার্য।