চট্টগ্রাম নগরের চান্দগাঁও এলাকায় ইয়াবা সেবনসহ পারিবারিক বিষয় নিয়ে ঝগড়ার জেরে ছোট ভাই এবং তার স্ত্রীর হাতে খুন হয়েছে বড় ভাই। খুন করে পালানোর সময় পুলিশের হাতে আটক পড়েছে দুজনেই।
বুধবার (২১ মে) গভীর রাতে নগরীর চান্দগাঁও আবাসিক এলাকার বি-ব্লকের দুই নম্বর সড়কের এক বাসায় এ হত্যাকাণ্ড ঘটে বলে পুলিশ জানিয়েছে।
নিহত মো. সাহেদ (৩৫) চট্টগ্রামের রাউজান উপজেলার নোয়াপাড়া গ্রামের হাজী মীর হোসেন সওদাগর বাড়ির মৃত জালাল আহমেদের ছেলে।
সাহেদের ছোট ভাই মো. জাহেদ (২৭) ও তার স্ত্রী তাসমিন বিনতে আসলাম ওহিকে (২৬) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
চান্দগাঁও থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আফতাব উদ্দিন বলেন, সাহেদ ও জাহেদ দুবাই থাকতেন। বছরখানেকের ব্যবধানে উভয়ে দেশে ফিরে এসে বেকার অবস্থায় ছিলেন। তাদের বাবা মারা গেছেন। আরেক ভাই মা ও তার পরিবার নিয়ে দুবাইয়ে থাকেন।
চান্দগাঁও আবাসিক এলাকায় একই বাসায় সাহেদ, জাহেদ ও তার স্ত্রী থাকতেন। সাহেদের সঙ্গে তার স্ত্রীর কয়েকমাস আগে বিচ্ছেদ হয়েছে।
বুধবার রাত আনুমানিক দেড়টার দিকে একজন অ্যাম্বুলেন্স চালকের কল পেয়ে চান্দগাঁও থানা পুলিশের একটি টিম অভিযানে নামে। নগরীর কাপ্তাই রাস্তার মাথার কাছাকাছি এলাকায় অ্যাম্বুলেন্সটি পুলিশ আটক করতে সক্ষম হয়। তল্লাশি চালিয়ে সেখানে সাহেদের রক্তাক্ত লাশ এবং জাহেদ ও তার স্ত্রী তাসমিনকে পাওয়া যায়।
প্রাথমিক তদন্তে পাওয়া তথ্যের ভিত্তিতে ওসি আফতাব বলেন, জাহেদ ও তাসমিন রাতভর ইয়াবা সেবন করে। সারাদিন ঘুমায়। ইয়াবা আসক্তি নিয়ে ও পারিবারিক বিভিন্ন বিষয়ে তাদের সঙ্গে সাহেদের মনোমালিন্য চলছিল।
গতকাল (বুধবার) সন্ধ্যার পর বাসায় তারা তিনজন ঝগড়া করে। জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে বাসার আসবাবপত্রও ভাংচুর করে। ঝগড়া শেষে সাহেদ নিজ কক্ষে গিয়ে ঘুমিয়ে পড়েন। গভীর রাতে ওই কক্ষে ঢুকে জাহেদ ও তার স্ত্রী মিলে ঘুমন্ত অবস্থায় সাহেদকে চাকু দিয়ে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে খুন করে।
তিনি বলেন, এরপর জাহেদ গিয়ে একটি সিএনজি অটোরিকশা ডেকে আনে।
অটোরিকশায় লাশ তুলে প্রথমে আবাসিক এলাকা থেকে বের করে নেয়। এরপর একটি অ্যাম্বুলেন্স পেয়ে সেখানে লাশ তুলে নেয়।
অ্যাম্বুলেন্স নিয়ে তারা তাদের গ্রামের বাড়ি রাউজানের নোয়াপাড়ার দিকে রওনা দেয়।
হত্যাকাণ্ডের বিষয়টি আঁচ করতে পেরে অ্যাম্বুলেন্স চালক কৌশলে বিষয়টি থানায় অবহিত করে। এরপর আমরা চান্দগাঁও আবাসিক এলাকা থেকে প্রায় দুই কিলোমিটার এগিয়ে অ্যাম্বুলেন্সটি আটকাতে সক্ষম হয়।
ওসি জানান, সাহেদের লাশ ময়নাতদন্তের জন্য চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে। আটক দু’জনকে থানায় রাখা হয়েছে। তাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়েরের প্রক্রিয়া চলছে।