স্টাফ রিপোর্টার : চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির প্রলোভন দেখিয়ে বিজ্ঞাপন দিয়ে তরুণীদের পাচার করে দেওয়া হতো। এরপর সেখানে যৌন পল্লীতে বিক্রি করা হতো তরুণীদের।
পাচারকারী চক্রটি পাসপোর্ট, জন্মনিবন্ধন, জাতীয় পরিচয়পত্র ও ভিসা প্রসেসিংয়ে যোগসাজশের মাধ্যমে স্বল্প সময়ে নথিপত্র তৈরি করতো।
এমন কর্মকাণ্ডের অভিযোগে চার সদস্যের একটি মানব পাচারকারী চক্রকে আটক করেছে র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব)-৪।
বুধবার (১৫ অক্টোবর) দুপুর ১২টায় রাজধানীর কারওয়ান বাজারে র্যাবের মিডিয়া সেন্টারে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য জানান র্যাব-৪ এর অধিনায়ক লে. কর্নেল মো. মাহবুব আলম।
র্যাব বলছে, সম্প্রতি চীন থেকে পালিয়ে আসা এক তরুণীর মামলার ভিত্তিতে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে চক্রের মূল হোতাসহ চারজনকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতার আসামিরা হলেন : চক্রের মূল হোতা আব্বাস মোল্লা, জাহিদুল ইসলাম ওরফে বাবু, মিনার সরদার ও মোহাম্মদ রিপন শেখ।
র্যাব-৪ এর অধিনায়ক মাহবুব আলম জানান, ভুক্তভোগী তরুণী পিরোজপুরের একটি বিউটি পার্লারে চাকরি করতেন। এ বছরের মার্চে ফেসবুকে চীনে উচ্চ বেতনের চাকরির বিজ্ঞাপন দেখে বাবু নামে এক ব্যক্তির সঙ্গে যোগাযোগ করেন তিনি। এরপর বাবুর পরামর্শে তার বোনসহ ঢাকায় আসেন। চক্রের সদস্যরা তাদের পাসপোর্ট ও ভিসার কাজ সম্পন্ন করে এ বছরের ১৩ জুন তাদের চীনে পাঠায়। তবে সেখানে গিয়ে তাদের বিউটি পার্লারে চাকরি না দিয়ে জোরপূর্বক যৌনপল্লীতে বিক্রি করে দেয় চক্রটি।
ভুক্তভোগী জানায়, চক্রের সদস্যরা অনৈতিক কাজের ভিডিও ধারণ করে ব্ল্যাকমেইল ও শারীরিক নির্যাতন চালাত। পরে কৌশলে পালিয়ে তিনি দেশে ফেরেন এবং ৩০ সেপ্টেম্বর রাজধানীর শাহ আলী থানায় মামলা করেন।
মাহবুব আলম বলেন, ভুক্তভোগীর অভিযোগের ভিত্তিতে আমরা ছায়াতদন্ত শুরু করি। পরে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় চক্রের মূলহোতা ও সহযোগীদের অবস্থান শনাক্ত করে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা থেকে চক্রের চারজনকে আটক করা হয়।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার আসামিরা স্বীকার করেছেন, তারা প্রায় ১০ বছর ধরে বাংলাদেশের বিভিন্ন জেলা থেকে তরুণীদের আকর্ষণীয় বেতনের চাকরি ও বিয়ের প্রলোভন দেখিয়ে চীনে পাচার করে আসছিল।
র্যাব-৪ অধিনায়ক জানান, তাদের কাছে তথ্য আছে, চক্রটি অন্তত ২০ জন নারীকে চীনে পাচার করেছে। তবে প্রকৃত সংখ্যা আরও বেশি হতে পারে। আটক চারজন ছাড়াও দেশের আরও কয়েকজন এবং কিছু চীনা নাগরিক এই চক্রের সঙ্গে জড়িত রয়েছে।
আটক আসামিদের বিরুদ্ধে মানব পাচার প্রতিরোধ ও দমন আইনে মামলা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে।