
মালয়েশিয়া থেকে সংগ্রহ করা এই মাদকের মূলহোতাসহ চক্রের সব সদস্য গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে এমন তথ্য মিলেছে বলে দাবি মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তাদের।
এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
আসামিরা হলেন : খন্দকার তৌকিরুল কবির তামিম (২৬), মেহেদী হাসান রাকিব (২৬), মো. মাসুম মাসফিকুর রহমান ওরফে সাহস (২৭) ও আশরাফুল ইসলাম (২৫)।
গ্রেফতারদের মধ্যে তামিম পাবনা জেলার আকরামুল কবিরের ছেলে। তিনি একটি বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে চতুর্থ বর্ষে অধ্যয়নরত। অন্যদিকে রাকিব সাতক্ষীরার আব্দুল গফফারের ছেলে। সাহস ঢাকা জেলার মতিউর রহমানের ছেলে। তিনি ঢাকার একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে সেলস এবং মার্কেটিং কর্মকর্তা হিসেবে কর্মরত এবং আশরাফুল ঢাকার শামসুল ইসলামের ছেলে। তিনি সম্প্রতি ইন্ডিয়াতে পড়াশোনা করে বাংলাদেশে ব্যবসা শুরু করেছিলেন।
শুক্রবার দুপুরে রাজধানীর সেগুনবাগিচায় মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক হাসান মারুফ এসব তথ্য জানান। তিনি জানান, ভেপ-এর মাধ্যমে গোপনে ছড়িয়ে পড়া এক নতুন ধরনের সিনথেটিক মাদক এমডিএমবির সন্ধান পাওয়া যায় এবং খুচরা বিক্রেতা হিসেবে তামিমকে চিহ্নিত করা হয়। সোর্স ব্যবহার করে তার কাছে স্যাম্পল অর্ডার করা হয়। অর্ডারকৃত মাদক ডেলিভারির মুহূর্তে তাদের গ্রেফতার করা হয়।
মালয়েশিয়া থেকে সংগ্রহ করা হতো এমডিএমবি:
মাদকদ্রব্য নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তরের মহাপরিচালক জানান, রাকিবের তথ্য মতে দেশের অভ্যন্তরে থাকা একটি এমডিএমবির সাপ্লাই নেটওয়ার্ক শনাক্ত করা হয়। সেই সঙ্গে মাদকটি দেশে আনার মূলহোতা দুজন- আশরাফ ও সাহসকেও শনাক্ত করা হয়।
এ সময় ৩১০ মিলিলিটার এমডিএমবি পাঁচটি কন্টেইনারে, গাঁজার চকলেট, পাঁচটি ভেপ ডিভাইস, এমডিএমবি ব্যবহারের ই-লিকুইড এবং এমডিএমবি বিক্রির জন্য প্রস্তুত খালি ক্যানিস্টার।
জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতার ব্যক্তিরা জানান :
চক্রটির পাঁচ সদস্য গ্রেফতারের পর প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানিয়েছে, মিরপুর সেনপাড়া এলাকার স্থায়ী বাসিন্দা আশরাফ দীর্ঘদিন ধরে সমাজের বিত্তশালী বা ধনী শ্রেণির মাঝে এই ধরনের মাদকের সরবরাহ করে আসছিলেন। তিনি মূলত ই-সিগরারেট ভ্যাপস-এর ব্যবহারকারীদের টার্গেট করে তার সহযোগী সাহসের সমন্বয়ে এমডিএমবি মাদকের একটি মার্কেট তৈরির প্রচেষ্টা করছিল। জিজ্ঞাসাবাদে তিনি স্বীকার করেছেন, বিভিন্ন সময় মালয়েশিয়ায় যাতায়াত করায় সেখান থেকে এই মাদক সংগ্রহ করে দেশে পাঠাতেন।
বিক্রির প্লাটফর্ম সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম:
মহাপরিচালক বলেন, চক্রটি অত্যন্ত চাতুরতার সঙ্গে হোয়াটসঅ্যাপ ও ফেসবুককে পুরোপুরি ‘অদৃশ্য বাজার’ হিসেবে ব্যবহার করত। ফেসবুকের ক্লোজড গ্রুপ, রিভিউ পেজ ও ভুয়া অ্যাকাউন্টে গোপন সংকেতভিত্তিক পোস্ট দিত তারা। যেখানে সাধারণ ফ্লেভার, গেমিং টুল বা ‘পোর্টেবল ডিভাইস’-এর আড়ালে বোঝানো হতো আসল পণ্য।
