বুধবার (১৬ জুলাই) দিবাগত রাতে খাগড়াছড়ি সদর থানার ছয়জনের বিরুদ্ধে মামলা করেন ভুক্তভোগীর বাবা। মামলার পরপরই রাত ৩টার দিকে চারজনকে গ্রেফতার করে পুলিশ।
গ্রেফতার ব্যক্তিরা হলেন : খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের আরমান হোসেন (৩২), ইমন হোসেন (২৫), এনায়েত হোসেন (৩৫), সাদ্দাম হোসেন (৩২)। এই ঘটনায় অভিযুক্ত মো. সোহেল ইসলাম (২৩) ও মো. মুনির ইসলাম (২৯) পলাতক রয়েছেন।
সদর থানার অফিসার্স ইনচার্জ মো. আব্দুল বাতেন মৃধা বলেন, চারজনকে আটক করা হয়েছে। বাকিদের গ্রেফতারে অভিযান চলছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুন রথযাত্রা মেলায় অংশ নেওয়ার পর রাতে এক আত্মীয়ের বাড়িতে আশ্রয় নেয় ভুক্তভোগী কিশোরী। সেখানেই গভীর রাতে ছয়জন যুবক ঘরে ঢুকে ভুক্তভোগীর আত্মীয়দের বেঁধে রেখে তাকে ধর্ষণ করে।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) ভুক্তভোগীর পরিবারের লোকজন সাথে কথা বলে জানা গেছে, লজ্জা ও ভয়ভীতির কারণে মেয়েটি প্রথমে কিছু প্রকাশ করেনি। কিন্তু মানসিক ভারসাম্য হারিয়ে ১২ জুলাই বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে কিশোরী। পরে অসুস্থ অবস্থায় খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে নেওয়ার পর জ্ঞান ফিরলে বিষয়টি পরিবারকে জানায় ওই কিশোরী। ভুক্তভোগী বর্তমানে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক রিপল বাপ্পি চাকমা বলেন, শিক্ষার্থীর অবস্থা গুরুতর এবং মানসিকভাবে বিপর্যস্ত। তাকে গুরুত্বের সাথে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি পুলিশ সুপার আরোফিন জুয়েল বলেন, মামলা হওয়ার পরপরই আমরা চারজনকে আটক করেছি। বাকি দু’জনকে গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
এ ঘটনায় ভাইবোনছড়ায় সাধারণ শিক্ষার্থী, ছাত্র ও যুব সমাজ, বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি), পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সমাবেশ করেছে। এছাড়া ৮ম শ্রেণির পাহাড়ি ছাত্রীকে গণধর্ষণের ঘটনায় হিল উইমেন্স ফেডারেশনে ও বৃহত্তর পার্বত্য চট্টগ্রাম পাহাড়ি ছাত্র পরিষদ (পিসিপি) জেলা শাখা দুই সংগঠন নিন্দা জানিয়ে সংবাদ বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে এবং অপরাধীদের গ্রেফতারের দাবি জানিয়ে প্রেস বিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ত্রিপুরা স্টুডেন্সস ফোরাম।
খাগড়াছড়িতে অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া পাহাড়ি ছাত্রীকে ধর্ষণের ঘটনায় সাবেক সংসদ সদস্য ও খাগড়াছড়ি জেলা বিএনপির সভাপতি ওয়াদুদ ভুঁইয়ার নির্দেশনায় ভুক্তভোগীকে সদর হাসপাতালে চিকিৎসার খোঁজ খবর নিতে যান এবং পরিবারকে এক লাখ টাকা চিকিৎসা সহায়তার প্রদান করা হয়।