স্টাফ রিপোর্টার : খাগড়াছড়ি সদর উপজেলায় অষ্টম শ্রেণিতে পড়ুয়া ১৪ বছর বয়সী এক স্কুলছাত্রী সংঘবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছে। ঘটনার কয়েকদিন পর মানসিক বিপর্যয়ে ভুগতে থাকা ওই শিক্ষার্থী বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। জ্ঞান ফেরার পর পরিবারের সদস্যরা কারণ জানতে চাইলে ওই শিক্ষার্থী জানায়, তার সঙ্গে ঘটে যাওয়া ‘ভয়ঙ্কর’ ঘটনার কথা। বর্তমানে সে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে চিকিৎসাধীন রয়েছে।
বুধবার (১৬ জুলাই) রাতে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর বাবা খাগড়াছড়ি সদর থানায় ছয়জনকে আসামি করে একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেন। মামলার পরপরই রাতে সেনাবাহিনী ও পুলিশ যৌথ অভিযান চালিয়ে চারজনকে গ্রেপ্তার করে। বাকি দুই আসামি এখনো পলাতক রয়েছে।
এছাড়া মামলার অপর দুই আসামি মো. মুনির ইসলাম (২৯) ও মো. সোহেল ইসলাম (২৩) এখনও পলাতক রয়েছেন। তারা সবাই খাগড়াছড়ি সদর উপজেলার ভাইবোনছড়া ইউনিয়নের বাসিন্দা।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, গত ২৭ জুন রাতে খাগড়াছড়ির রথযাত্রা মেলায় অংশ নিয়ে মেয়েটি স্থানীয় এক আত্মীয়ের বাড়িতে রাত্রিযাপন করে। গভীর রাতে অভিযুক্ত ছয় যুবক জোরপূর্বক ঘরে ঢুকে প্রথমে তার আত্মীয়কে বেঁধে ফেলে। এরপর মেয়েটিকে পালাক্রমে ধর্ষণ করে তারা।
ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর পরিবার জানায়, ধর্ষণের পর সামাজিক লজ্জা, নিরাপত্তাহীনতা ও ভয়ভীতির কারণে ওই কিশোরী প্রথমে ঘটনাটি কাউকে জানায়নি। কিন্তু ঘটনার মানসিক ভার সহ্য করতে না পেরে ধীরে ধীরে অসুস্থ হয়ে পড়ে। একপর্যায়ে ১২ জুলাই সে বিষপান করে আত্মহত্যার চেষ্টা চালায়।
পরে আশঙ্কাজনক অবস্থায় পরিবারের সদস্যরা দ্রুত তাকে খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। সেখানে চিকিৎসাধীন অবস্থায় জ্ঞান ফেরার পর সে পুরো ঘটনাটি পরিবারের সদস্যদের জানায়। এরপরই পরিবারের পক্ষ থেকে থানায় মামলা দায়ের করা হয়।
খাগড়াছড়ি সদর হাসপাতালের আবাসিক চিকিৎসক ডা. রিপল বাপ্পি চাকমা জানিয়েছেন, ভুক্তভোগী কিশোরীর শারীরিক অবস্থা গুরুতর। পাশাপাশি সে চরম মানসিক আঘাতের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে। তাকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দিয়ে চিকিৎসা দেওয়া হচ্ছে।
খাগড়াছড়ি জেলার পুলিশ সুপার মো. আরেফিন জুয়েল বলেন, ‘মামলার পরপরই চারজনকে আটক করেছি। বাকি দুই আসামিকেও দ্রুত গ্রেপ্তারের চেষ্টা চলছে। ভুক্তভোগীর জবানবন্দি নেওয়ার প্রস্তুতি চলছে।’