মামলার আসামিদের মধ্যে রয়েছে : তজুমদ্দিন সরকারি কলেজ ছাত্রদলের আহ্বায়ক মো. রাসেল এবং ফরিদ উদ্দিনের সহযোগী আলাউদ্দিন, যিনি নিজেকে স্থানীয় যুবদলের নেতা হিসেবে পরিচয় দেন, তবে কোনো পদ নেই।
মামলার বাদী ধর্ষণের শিকার নারীর স্বামী বলেন, তার দ্বিতীয় স্ত্রীর সঙ্গে পারিবারিক বিরোধ চলছে। এ নিয়ে কথা বলার জন্য শনিবার রাতে ফোন করে তাকে তজুমদ্দিন বাজার এলাকায় যেতে বলেন ওই নারী। সেখানে পৌঁছানোর পর শ্রমিক দলের নেতা ফরিদ উদ্দিন, তার সহযোগী আলাউদ্দিন, ছাত্রদল নেতা রাসেলসহ ৫ থেকে ৭ জন তাকে মারধর করে চার লাখ টাকা চাঁদা দাবি করে। টাকা না পেয়ে তাকে রাতভর নির্যাতন করা হয়। খবর পেয়ে পরদিন রোববার বেলা ১১টায় ওই ব্যক্তির প্রথম স্ত্রী সেখানে গিয়ে আসামিদের ১০ হাজার টাকা দেন। কিন্তু এতে খুশি হননি ফরিদ ও তার লোকজন। ক্ষুব্ধ হয়ে স্বামী-স্ত্রী দু’জনকে নির্যাতন করতে থাকে তারা।
ভুক্তভোগী নারীর অভিযোগ, দুপুর ১২টায় তার স্বামীকে জোরপূর্বক বাসার বাইরে নিয়ে যায় আসামিদের কয়েকজন। এ সময় ওই বাসার একটি কক্ষে ফরিদ ও আলাউদ্দিন মিলে তাকে ধর্ষণ করে। তখন ঘরের বাইরে পাহারায় ছিল মারধরের শিকার ব্যক্তির দ্বিতীয় স্ত্রী।
ধর্ষণের শিকার নারী আসামিদের ‘ভাই’ ডেকেও রক্ষা পাননি। বিষয়টি কাউকে না জানানোর শর্তে বিকেলে মুক্তি স্বামী-স্ত্রীর। বাড়ি ফিরে সন্ধ্যায় দুইবার আত্মহত্যার চেষ্টা চালান ধর্ষণের শিকার নারী। তবে স্বজনদের কারণে তিনি তা করতে পারেননি।পরে প্রতিবেশীদের সহায়তায় ওই রাতে জাতীয় জরুরি সেবা নম্বর ৯৯৯-এ কল করে বিষয়টি পুলিশকে জানানো হয়। পরে তজুমদ্দিন থানা পুলিশ গিয়ে ভুক্তভোগী নারীকে উদ্ধার করে।
সোমবার সন্ধ্যায় তজুমদ্দিন থানার ওসি মোহাব্বত খান জানান, এজাহার অনুযায়ী, ফরিদ ও আলাউদ্দিন ধর্ষণ করে এবং একজন তাদের সহযোগিতা করে। মারধরের ঘটনায় ৬-৭ জনকে অভিযুক্ত করা হয়েছে। ভুক্তভোগী নারীর স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা করা হচ্ছে। এসপি মোহাম্মদ শরীফুল হক বলেন, তদন্তে প্রমাণ হলে অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এদিকে অভিযোগ অস্বীকার করে ছাত্রদল নেতা রাসেল বলেন, ‘আমি বিষয়টি ফেসবুকের মাধ্যমে জানতে পেরেছি।’ উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব ওমর আসাদ রিন্টু জানান, বিএনপির অঙ্গসংগঠনের কেউ এ ঘটনায় জড়িত থাকলে সাংগঠনিকভাবে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়া হবে।