চার দিনের সফর শেষ করে ১৩ জুন ঢাকার উদ্দেশে রওনা দেবেন প্রধান উপদেষ্টা। ১৪ জুন সকালে তার ঢাকা থাকার কথা রয়েছে। ১১ জুন লন্ডনের ১০ নম্বর ডাউনিং স্ট্রিটে কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ড. ইউনূসের শীর্ষ পর্যায়ের দ্বিপক্ষীয় বৈঠক হবে।
বৈঠকে বাণিজ্য, বিনিয়োগ, উন্নয়ন অংশীদারত্বসহ দ্বিপক্ষীয় সহযোগিতার নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা হবে।
ক্ষমতাচ্যুত আওয়ামী লীগ সরকারের সময় বাংলাদেশ থেকে পাচার হওয়া অর্থের অন্যতম প্রধান গন্তব্য ছিল যুক্তরাজ্য। বৈঠকে পাচার হওয়া অর্থ ফেরতের বিষয়টিও আলোচনায় আসতে পারে। এছাড়া বাংলাদেশের গণতান্ত্রিক উত্তরণসহ সংস্কার কার্যক্রমে অন্তর্বর্তী সরকারের প্রতি যুক্তরাজ্যের রাজনৈতিক সমর্থনের বিষয়টি গুরুত্ব পাবে।
বিশেষ করে জুলাই-আগস্টের গণঅভ্যুত্থানের নৃশংসতার বিচার, সংস্কার এবং নির্বাচনের পরিক্রমায় এগিয়ে যাওয়ার উদ্যোগে যুক্তরাজ্যের সমর্থনের বিষয়টি আলোচনায় আসতে পারে।
১২ জুন বাকিংহাম প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের সঙ্গে দেখা করবেন ড. ইউনূস। ওইদিন বিকেলে সেন্ট জেমস প্রাসাদে রাজা তৃতীয় চার্লসের হাত থেকে কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড নেবেন তিনি। প্রধান উপদেষ্টা লন্ডন সফরের সময় ১১ জুন যুক্তরাজ্যভিত্তিক গবেষণা প্রতিষ্ঠান চ্যাথাম হাউজ আয়োজিত এক সংলাপে অংশ নেবেন। ওই সংলাপের প্রতিপাদ্য ‘বাংলাদেশের ভবিষ্যতের পথে চ্যালেঞ্জ ও সম্ভাবনা’।
যুক্তরাজ্যের দাতব্য প্রতিষ্ঠান কিংস ফাউন্ডেশন গত বছর কিংস চার্লস হারমনি অ্যাওয়ার্ড চালু করেছে। ২০২৪ সালে এই পুরস্কার পেয়েছিলেন জাতিসংঘের সাবেক মহাসচিব বান কি মুন।
অর্থপাচার এবং রোহিঙ্গা ইস্যুতে আলোচনা :
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে, বৈঠকে বাংলাদেশ ও যুক্তরাজ্যের মধ্যে পাচার হওয়া অর্থ ফেরত আনার বিষয়টি গুরুত্ব পাবে। গত মার্চে যুক্তরাজ্যের আর্থিক ও ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞা আরোপের জন্য ব্রিটিশ কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করেছে বাংলাদেশ সরকার। এ বিষয়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর আহসান এইচ মনসুর লন্ডনে অল-পার্টি পার্লামেন্টারি গ্রুপের সদস্যদের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেছেন, যাতে বাংলাদেশি ব্যবসায়ী গোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া যায়। ব্রিটিশ সরকারকে বাংলাদেশি অর্থ পাচারকারীদের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা আরোপে রাজি করানোর চেষ্টা চলছে।
এছাড়াও রোহিঙ্গা সংকট সমাধানে যুক্তরাজ্য বাংলাদেশের পাশে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের নিরাপদ ও সম্মানজনক প্রত্যাবাসন নিশ্চিত করতে ব্রিটিশ সরকারের কাছে সহায়তার চাইতে পারে বাংলাদেশ সরকার।
প্রধান উপদেষ্টার লন্ডন সফর নিয়ে যুক্তরাজ্যে বাংলাদেশ হাইকমিশনে নিযুক্ত প্রেস মিনিস্টার আকবর হোসেন বলেন, ওনার (প্রধান উপদেষ্টা) সফর চূড়ান্ত হয়েছে। কর্মসূচি নিয়ে কাজ চলছে। বাংলাদেশি কমিউনিটির সঙ্গে মতবিনিময় সভার তারিখ ও স্থান নিয়ে কাজ চলমান। দু-একদিনের মধ্যে সব চূড়ান্ত হবে।