শুক্রবার (২৩ মে) সকালে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক মোতাছিম বিল্লাহ। এর আগে গতকাল সন্ধ্যায় গাজীপুরের টঙ্গী থানা এলাকায় অভিযান পরিচালনা করে তাকে গ্রেফতার করা হয়।
পুলিশ জানায়, গত ২৯ মে রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-আরিচা মহাসড়কের আরিচামুখী লেন সংলগ্ন ব্যাংক কলোনি এলাকায় শাহীনকে গুলি করে হত্যার পর পালিয়ে যায় মেহেদী। এ ঘটনায় নিহতের স্ত্রী মারিয়া আক্তার বাদী হয়ে অজ্ঞাতনামা আসামি করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের পর পুলিশ তদন্ত শুরু করলে পাশাপাশি ছায়াতদন্ত শুরু করে র্যাব-৪। পরে আজ সন্ধ্যায় গাজীপুরের টঙ্গী থানা এলাকার একটি বাসায় অভিযান পরিচালনা করে মেহেদীকে গ্রেফতার করা হয়।
স্থানীয়রা জানান, ব্যাংক কলোনি এলাকায় বরুনের গ্যারেজে পরিবহনে রং মিস্ত্রীর কাজ করতেন শাহীন। সেই গ্যারেজে প্রায়ই মাদক ও জুয়ার আসর বসতো। যে আসরে নিয়মিত অংশগ্রহণ করতেন মেহেদী। সেখানেই শাহীনের সঙ্গে কথা-কাটাকাটির জেরে বিরোধ হয় মেহেদীর। পরে শাহীনকে জনসম্মুখে গুলি করে হত্যার পর পালিয়ে যান তিনি।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে সাভারের ছায়াবিথীর এক ব্যক্তি বলেন, ১৯৯২ সালে ঢাকা-আরিচা মহাসড়ক সংলগ্ন একটি মাঠে (বর্তমান আল-মুসলিম পোশাক কারখানা) যাত্রা চলাকালীন সাভারের বিরুলিয়ার আব্দুর রশিদ নামের এক ব্যক্তিকে মাথায় গুলি করে হত্যা করেন তিনি। তবে ক্ষমতা আর কৌশলে মামলার আপস করে হত্যার দায় থেকে মুক্তি পান মেহেদী। তখন থেকেই তিনি অস্ত্র ব্যবহার করে আসছেন। তিনি কোনো পেশায় জড়িত ছিলেন না। তার পেশা ছিল মাদকসেবন ও জুয়া খেলা।
গ্রেফতার মেহেদী হাসানের ভাই জাহিদ হাসান বলেন, আমার ভাই মেহেদী হাসানকে টঙ্গীর তারগাছ এলাকা থেকে গ্রেফতার করেছে র্যাব। আমার ভাই হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত কি না জানি না। তবে তাকে হত্যার অভিযোগে গ্রেফতার করা হয়েছে। আমার ভাই বাংলাদেশ চলচ্চিত্র সমিতির সদস্য ও সাভার প্রেসক্লাবের সহ-সভাপতি ছিল। তিনি ওই সময় দৈনিক আল মোজাদ্দেদ পত্রিকার সাংবাদিক ছিলেন।
সাভার মডেল থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) মোতাছিম বিল্লাহ বলেন, মেহেদীকে গ্রেফতারের বিষয়টি নিশ্চিত করেছে র্যাব। আটক মেহেদীকে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। আইনগত প্রক্রিয়া সম্পন্ন করে তাকে আজ দুপুরে থানায় হস্তান্তরের কথা রয়েছে।
তিনি বলেন, ঘটনার পরপর সিসিটিভি ফুটেজ পর্যবেক্ষণ করা হয়। ফুটেজে দেখা যায়, সাদা গেঞ্জি পরা এক ব্যক্তি ঘটনাস্থল থেকে হেঁটে পালিয়ে যাচ্ছেন। তদন্ত করে জানা যায় সেই ব্যক্তিই মেহেদী হাসান। হত্যাকাণ্ডের মূল পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারী তিনি নিজেই।
এ ব্যাপারে সিপিসি-২, র্যাব-৪ এর উপ-পরিচালক মেজর জালিস মাহমুদ খাঁনের সাথে মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তাকে পাওয়া যায়নি।