চট্টগ্রাম ওয়াসার মোড়ে গণমানুষের ভিড়। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে রাখা হয়েছে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) ভাইস চেয়ারম্যান, সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানের মরদেহ। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদ প্রাঙ্গণে প্রস্তুতি চলছে তাঁর জানাজার। কেউ মাঠে, কেউ রাস্তায় সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়েছেন জানাজা পড়তে। কেউ কেউ লাইনের বাইরেও ঘুরছেন। ভিন্ন ধর্মের অনেকে জানাজায় আসা নেতা-কর্মীদের সহযোগিতা করছেন।
এসময় চট্টগ্রাম মহানগর ছাত্রদলের সাবেক যুগ্ম সম্পাদক সুকান্ত তালুকদার বলেন, ‘নোমান ভাই প্রতিহিংসার রাজনীতি করতেন না। ছাত্র ও শ্রমিকদের রাজনীতিতে যুক্ত ছিলেন তিনি। তাই কেন্দ্রীয় কমিটির শীর্ষ পদে চলে যাওয়ার পরও তিনি সাধারণ মানুষের কথা ভাবতেন। চট্টগ্রামে একটি বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রয়োজন বুঝে তিনি প্রথম দাবি তোলেন। চট্টগ্রাম ভেটেরিনারি ও এনিম্যাল সাইন্সেস বিশ্ববিদ্যালয়ও তার অবদান। তাই ছাত্রদল যারা করে, তাদের সবার নোমান ভাইয়ের প্রতি আকর্ষণ আছে।’
শুক্রবার (২৮ ফেব্রুয়ারি) জুমার নামাজের পরে বিএনপি ও এর অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা তাদের প্রিয় নেতাকে নিয়ে এভাবেই মন্তব্য করেন।
সরেজমিনে দেখা যায়, জুমার নামাজ শেষ হতে না হতে মসজিদ প্রাঙ্গণে দীর্ঘ লাইনে দাঁড়িয়ে যায় বিএনপি, জাতীয় পাটি, সিপিবি ও জামায়েতসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা কর্মীরা। কিছুক্ষণ পর মরহুম আবদুল্লাহ আল নোমানের মরদেহ নামানো হয় অ্যাম্বুল্যান্স থেকে। প্রিয় নেতার মুখ দেখতে শৃঙ্খলা ভেঙে নেতাকর্মীরা ছুটে যান অ্যাম্বুল্যান্সের সামনে। পরে তাদের শান্ত করে মরদেহ রাখা হয় জানাজার মঞ্চে। তপ্ত রোদে দাঁড়িয়ে থাকা নেতাকর্মীরা শুনলেন স্মৃতিচারণ। এতে অংশ নিয়েছেন বিএনপি স্থায়ী কমিটির সদস্য আমীর খসরু মাহমুদ চৌধুরী, সহ সাংগঠনিক সম্পাদক মীর হেলাল, মাহবুবে রহমান শামীম, নগর আহবায়ক এরশাদ উল্লাহ, বাংলাদেশ কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) কেন্দ্রীয় সভাপতি শাহ আলম, বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী চট্টগ্রামের আমীর সাবেক এমপি শাহজাহান চৌধুরী বক্তব্য রাখেন।
এছাড়া প্রথম সারিতে উপস্থিত ছিলেন- চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশনের মেয়র ডা. শাহাদাত হোসেন, বিএনপি উত্তর জেলা আহ্বায়ক গোলাম আকবর খন্দকার, চট্টগ্রাম মহানগর কমিটির সাবেক সদস্য সচিব আবুল হাশেম বক্কর, মরহুমের ছেলে সাঈদ আল নোমান, জাতীয় পার্টির সোলায়মান আলম শেঠ, আনজুমানে রাহমানিয়া আহমদিয়া সুন্নিয়ার আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। জানাজা শেষে সাবেক মন্ত্রী, বীর মুক্তিযোদ্ধা আবদুল্লাহ আল নোমানকে রাষ্ট্রীয়ভাবে গার্ড অব অনার দেওয়া হয়।
মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) ভোর ৬টার দিকে রাজধানীর ধানমন্ডির বাসায় ইন্তেকাল করেন আবদুল্লাহ আল নোমান। প্রবীণ এ রাজনীতিবিদের মৃত্যুর খবরে চট্টগ্রামসহ সারাদেশের রাজনৈতিক অঙ্গনে শোকের ছায়া নেমে আসে।