ফারুক হোসেন, নিজস্ব প্রতিবেদক খাগড়াছড়ি : খাগড়াছড়ির মাটিরাঙ্গায় অনৈতিক কাজ করার সময় স্থানীয়দের হাতে ধরা পড়েছে আহাদ বৈদ্য (৩৫) নামে এক স্কুল শিক্ষক।
শুক্রবার (২২ আগস্ট) রাত ৮ টার সময় বেলছড়ি ইউনিয়নের ঢাকাইয়া পাড়া নামক এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।জানাগেছে, প্রভাবশালী আহাদ বৈধ্য বিষয়টি কে পূর্বের ঘটনার মতোই অর্থ ও প্রভাব খাটিয়ে বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করেন।
আজ (২৫ আগস্ট) সোমবার বিষয়টি নিয়ে জেলাজুড়ে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে চাঞ্চল্যকর সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই মন্তব্য বক্সে আহাদ বৈধ্যের উপর ক্ষোভ জেড়ে বলেন, এর আগেও এমন একাধিক ঘটনা ঘটিয়েছে আহাদ বৈদ্য, প্রতিবারই টাকার মাধ্যমে ছাড়া পেয়ে যায় সে।
ঘটনার সত্যতা যাচাই করতে সরেজমিনে গেলে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ব্যক্তী ক্ষোভ ঝেড়ে বলেন, শিক্ষক আহাদ বৈদ্য পূর্বেও একাধিকবার এ সমস্ত অনৈতিক কর্মকান্ডের সময় জনগণের হাতে ধরা পড়েছে। সম্প্রতি সে বেলছড়ি ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ডের খেদাছড়া বাজার পাড়া এলাকার ফয়জুল হকের স্ত্রী কুলসুমা আক্তারের সাথে অনৈতিক কজে লিপ্ত থাকা অবস্থায় এলাকাবাসীর হাতে আটক হয়।
ঢাকাইয়া পাড়া এলাকাবাসী জানায়, দীর্ঘদিন তারা পরকিয়া সম্পর্কে জড়িত ছিল। আহাদ বৈদ্য এর আগে অনেকবার কুলছুমার বাসায় যাতায়াত করেছিল। আজ তাদেরকে হাতেনাতে আটক করা হয়েছে। আহাদ বৈধ্য কুলসুমার স্বামী বাড়িতে না থাকার সুযোগ নিয়ে ২২ আগস্ট শুক্রবার রাত সাড়ে আটটার সময় কুলসুমার বাড়িতে আসে এবং তারা অনৈতিক কাজে জড়িয়ে পড়ে। পরে এলাকাবাসী জানতে পেরে তাদের হাতেনাতে আটক করে।
চলুন জেনে নিই আহাদ বৈদ্য সম্পর্কে: আহাদ বৈদ্য খেদাছড়া আমবাগান এলাকার খলিল বৈদ্যের ছেলে। সে আমবাগান সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়ে সহকারী শিক্ষক হিসেবে নিযুক্ত আছেন।
আহাদ বৈধ্য ২০২২ সালের ৩০ আগস্ট আমবাগান এলাকার বাসিন্দা মনির হোসেনের স্ত্রী নাসরিন আক্তার রিংকুর সাথে অনৈতিক কাজ করার সময় হাতেনাতে ধরা পড়েছে যা বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রচার হয়েছে। তাছাড়া আরো একাধিকবার সে এ ধরনের অনৈতিক কাজের সময় ধরা পড়েছে যা এলাকার প্রভাবশালী ব্যাক্তিদের মাধ্যমে ধামাচাপা দেওয়া হয়েছে।
ঘটনার সাথে জড়িত কুলসুম আক্তার বলেন, আহাদ বৈদ্য আমাকে স্কুলে সরকারি চাকুরী দিবে বলে আমার কাছ থেকে ৩ লক্ষ টাকা নেয়। পরবর্তীতে দীর্ঘদিন চাকুরী না হলে আমার স্বামী আমাকে চাকুরী করতে নিষেধ করলে আমি আহাদ বৈদ্যের কাছে টাকা ফেরত চাই। সে টাকা দিতে অসম্মতি প্রকাশ করে। এক পর্যায়ে সে আমাকে বলে তার কথা না রাখলে সে আমাকে টাকা বা চাকুরী দিবে না।
আমবাগান সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে পড়ুয়া এক মেয়ে শিক্ষার্থীর অভিভাবক আব্দুল মতিন মিয়া জানান, এই স্কুলের শিক্ষক থেকে ছাত্রদের জন্য ভালো কিছু আসা করা যায়না। তাকে চাকুরি থেকে বরখাস্ত করে এলাকা থেকে বের করে দেওয়া উচিত।
আমবাগান সমাজ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মিজানুর রহমান এর সাথে ঘটনা সম্পর্কে মুঠোফোনে যোগাযোগ করলে ঘটনার বিষয়টি নিশ্চিত করে তিনি বলেন, আহাদ বৈধ্যকে ঢাকাইয়া পাড়ার কুলছুমা আক্তার এর বাসায় অনৈতিক কাজে গ্রামবাসী আটক করেন। পরবর্তীতে পুরো এলাকাবাসী জানাজানি হয়। তবে আমি আমি শেষ পর্যন্ত ছিলাম না। পরে কী সিদ্ধান্ত হয়েছে জানিনা।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকর্তা (ভারপ্রাপ্ত) অংলাপ্রু মারমা'কে মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগ করার চেষ্টা করেও পাওয়া যায়নি।
মাটিরাঙ্গা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) তফিকুল ইসলাম তৌফিক জানান, এ বিষয়ে কোন অভিযোগ পাইনি অভিযোগ পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মাটিরাঙ্গা উপজেলা নির্বাহী অফিসার নার্গিস সুলতানা জানান, বিষয়টি সম্পর্কে কিছুটা অবগত আছি তবে, উপজেলা শিক্ষা কর্মকর্তার কাছ থেকে বিস্তারিত জেনে এবং অভিযোগ পেলে তদন্ত সাপেক্ষে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।