
গ্রেফতার আসামিরা হলেন : সামিদুল হক মনা (৪২), রবিউল ইসলাম রানা (২০), হজরত আলী (৪৫) ও মো. নয়ন মিয়া (৩০)।
এসময় তাদের কাছ থেকে হত্যাকাণ্ডে ব্যবহৃত ছুরি, বিশেষ কায়দায় তৈরি নাইলনের রশি ও ভিকটিমের অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয়।
তুরাগ থানা পুলিশ সূত্র জানিয়েছে, মঙ্গলবার বিকেলে তুরাগের ১৭ নম্বর সেক্টরের ৭ নম্বর ব্রিজের পূর্ব পাশে এইচ ব্লক রোড নং-৩/এ-এর একটি ফাঁকা জমির ছনের ভেতর থেকে গলাকাটা অবস্থায় অজ্ঞাত এক কিশোরের (বয়স আনুমানিক ১৬) মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
এর আগে স্থানীয় লোকজনের মাধ্যমে ৯৯৯-এ খবর পায় পুলিশ। পরে মরদেহটি ময়নাতদন্তের জন্য শহীদ সোহরাওয়ার্দী মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়।
এ ঘটনায় পরে নিহতের পরিচয় মেলে। পুলিশ নিখোঁজ সংক্রান্ত তথ্য যাচাই করে জানতে পারে, নিহত কিশোরের নাম মো. শান্ত (১৬)। সে গত ১৬ নভেম্বর বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে রিকশা চালাতে বের হয়ে আর বাসায় ফিরে আসেনি।
এ ঘটনায় কিশোরের মা বাদী হয়ে কাফরুল থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করেন। পরে নিহতের মামা মো. শহিদুল ইসলাম মরদেহটি তার ভাগ্নে মো. শান্তর বলে শনাক্ত করেন।
তুরাগ থানা পুলিশ সূত্র আরও জানায়, পুলিশ মাত্র ৩০ ঘণ্টার মধ্যে হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত আসামিদের শনাক্ত করে। প্রথমে কাফরুল এলাকা থেকে হত্যার মূল পরিকল্পনাকারী মো. সামিদুল হক মনাকে আটক করা হয়। জিজ্ঞাসাবাদে সামিদুল হত্যার লোমহর্ষক বর্ণনা দেন এবং ঘটনার সাথে জড়িত অন্যদের নাম-ঠিকানা প্রকাশ করেন। পরে তার দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে মো. রবিউল ইসলাম রানা, হজরত আলী ও মো. নয়ন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়।
গ্রেফতারকৃত আসামিরা পুলিশকে জানিয়েছে, অটোরিকশা ছিনতাই করে বিক্রি করার উদ্দেশে তারা পূর্বপরিকল্পিতভাবে শান্তকে ৭ নম্বর ব্রিজের কাছে নিয়ে যায়। সেখান থেকে কৌশলে ফাঁকা জমিতে নিয়ে গিয়ে রবিউল ইসলাম রানা নাইলনের রশি দিয়ে গলা চেপে ধরে এবং সামিদুল হক মনা ধারালো ছুরি দিয়ে গলাকেটে ভিকটিম শান্তকে হত্যা করে।
পরে হত্যাকারীরা অটোরিকশাটি নিয়ে ভাষানটেকের দিকে চলে যায় এবং হজরত আলী ও নয়ন মিয়ার সহায়তায় নেত্রকোনার দুর্গাপুরে নয়ন মিয়ার কাছে ৫০ হাজার টাকায় বিক্রি করেন।
পুলিশের ধারাবাহিক অভিযানে বুধবার (১৯ নভেম্বর) নেত্রকোনার দুর্গাপুর থেকে ছিনতাইকৃত অটোরিকশাটি উদ্ধার করা হয় এবং ক্রেতা মো. নয়ন মিয়াকে গ্রেফতার করা হয়। একইসঙ্গে ঘটনাস্থলের পার্শ্ববর্তী জঙ্গল থেকে হত্যায় ব্যবহৃত ধারালো ছুরি ও বিশেষ কায়দায় তৈরি নাইলনের রশি উদ্ধার করা হয়।
ঘটনায় তুরাগ থানায় নিয়মিত হত্যা মামলার প্রক্রিয়া চলমান রয়েছে। গ্রেফতারকৃতদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হচ্ছে।
