টাকা দিয়েও ইতালিতে যেতে না পারার ক্ষোভে অপহরণের পর হত্যা করা হয় ব্যবসায়ী কামাল হোসেন চঞ্চলকে (৩০)।
মঙ্গলবার (১১ মার্চ) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন সিরাজগঞ্জ জেলা কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পুলিশ সুপার এম.এন মোর্শেদ।
আটকরা ব্যক্তিরা হলেন- কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গমারী উপজেলার পাইকেরসারা গ্রামের আলী হোসেনের ছেলে রাসেল হোসাইন (২২), একই উপজেলার বারুইটারী গ্রামের ইউসুফ আলীর ছেলে নাসিমুজ্জামান (২৩) ও জিন্নাত আলীর ছেলে কফিলুর রহমান।
সংবাদ সম্মেলনে সিরাজগঞ্জ পিবিআই পুলিশ সুপার এম.এন মোর্শেদ বলেন, নিহত কামাল হোসেন চঞ্চল মোবাইল অ্যাক্সেসরিজ ও সমবায় সমিতি পরিচালনার পাশাপাশি বিদেশে লোক পাঠাতেন। তার দোকান কর্মচারীসহ ৫-৭ জন যুবককে ইতালিতে পাঠানোর কথা বলে তাদের কাছ থেকে টাকা নেয়। টাকা নেওয়ার পরও তাদের ইতালিতে পাঠাতে না পেরে টালবাহানা শুরু করে কামাল হোসেন চঞ্চল। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে তাকে হত্যার পরিকল্পনা করা হয়।
গত ২৩ ফেব্রুয়ারি কামাল হোসেন চঞ্চলকে ঢাকার মোহাম্মদপুর থেকে অপহরণ করে একটি মাইক্রোবাসে তুলে নেয়। কসটেপ দিয়ে পা-মুখ বেঁধে চেতনা নাশক ইনজেকশন পুশ করে বগুড়ার দিকে রওনা হয়।
মাইক্রোবাসে কামাল হোসেন চঞ্চলের ওপর নির্যাতন চালানো হয়। তার মৃত্যু নিশ্চিত মনে করে ঢাকা-বগুড়া মহাসড়কের সিরাজগঞ্জের রায়গঞ্জ উপজেলার তালতলা ব্রিজের ওপর থেকে কামাল হোসেন চঞ্চলের মরদেহ ফেলে চলে যায়।
পুলিশ সুপার আরও বলেন, গত ২৪ ফেব্রুয়ারি পুলিশ তার মরদেহ উদ্ধার করে। এ ঘটনায় নিহতের ভাই আসাদুজ্জামান রনজু বাদী হয়ে দোকান কর্মচারী রবিউল ইসলামের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত ব্যক্তিদের আসামি করে রায়গঞ্জ থানায় মামলা দায়ের করেন। মামলাটি পুলিশের পাশাপাশি পিবিআই ছায়া তদন্ত শুরু করে। প্রযুক্তির মাধ্যমে ঘটনার সঙ্গে জড়িতদের গ্রেফতারের চেষ্টা করে। গত ৯ মার্চ পিবিআই টিম কুড়িগ্রাম জেলার ভুরুঙ্গীমারী থানার বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালিয়ে তিনজনকে গ্রেফতার করে।
আটক আসামিরা হত্যার দায় স্বীকার করে গতকাল ১০ মার্চ আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি প্রদান করেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত অন্য আসামিদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।
নিহত কামাল হোসেন চঞ্চল ঢাকার মোহাম্মদপুর পূর্ব রায়ের বাজার এলাকার মৃত শাহজাহান আলীর ছেলে। তার গ্রামের বাড়ি বরিশাল জেলার গোরনদী থানার বোরাদি ব্যপারী পাড়া গ্রামে।