স্টাফ রিপোর্টার : ভুয়া পুলিশ পরিচয় ও অর্থের বিনিময়ে সেনাবাহিনীতে চাকরি দেওয়ার নামে প্রতারণার অভিযোগে একজনকে আটক করেছে র্যাব।
শনিবার (১২ জুলাই) সন্ধ্যায় ঠাকুরগাঁও জেলার সদর বন্দরপাড়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে সংস্থাটি তাকে আটক করে।
রোববার (১৩ জুলাই) সকালে র্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-পরিচালক মেজর আসিফ আল রাজেক ঢাকা মেইলকে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।
গ্রেফতার আসামির নাম রাজিউর রহমান (৪০)। তিনি ঠাকুরগাঁওয়ের পীরগঞ্জের জনগাঁও এলাকার সইফুর রহমানের ছেলে।
র্যাব জানায়, রাজিউর নিজেকে পুলিশ পরিচয়ে টাকার মাধ্যমে বিভিন্ন সরকারি চাকরি নিয়ে দেয় বলে সেনাবাহিনীতে চাকরি জন্য আবেদন করা এক ব্যক্তি জানতে পারেন।
তিনি রাজিউরের সাথে যোগাযোগ করেন। রাজিউর নিজেকে ঠাকুরগাঁও জেলাতে কর্মরত এসআই বলে পরিচয় দেয়। ওই চাকরিপ্রার্থী তাকে চাকরির কথা বললে তিনি অনেককে চাকরি দিয়েছেন বলে জানান। এরপর তাদের ১২ লাখ টাকার চুক্তি হয়।
চাকরি হলে প্রথমে ৬ লাখ টাকা এবং পরবর্তীতে অ্যাপয়নমেন্ট কার্ড হাতে পাওয়ার পরে বাকি ৬ লাখ টাকা দিতে হবে মর্মে চুক্তি হয়।
র্যাব আরও জানায়, গত ৩১ মে চাকরিপ্রার্থী মোবাইলে সেনাবাহিনীর মাঠে উপস্থিত হওয়ার জন্য এসএমএস এর কথা জানান।
গত ২ জুন সব সার্টিফিকেট এবং জনতা ব্যাংকের দু’টি ব্লাংক চেক স্বাক্ষর করে ঠাকুরগাঁও সদর ঠিকানায় পাঠাতে বলা হয়। তার কথা মতো দু’টি ব্লাংক চেক, মূল এসএসসি সার্টিফিকেটসহ মূল্যবান কাগজপত্র ও ৬টি নন-জুডিশিয়াল ফাঁকা স্ট্যাম্প কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে রাজিউরের কাছে ওই চাকরিপ্রার্থী পাঠিয়ে দেন। পরে রাজশাহী সেনানিবাসে সৈনিক পদে নিয়োগের মাঠ আছে বলে তিনি রাজিউরকে জানান। তবে চাকরিপ্রার্থী রাজশাহী সেনানিবাসে সৈনিক পদে নিয়োগে প্রাথমিক বাছাইয়ে বাদ পড়েন। তখন রাজিউরের সাথে যোগাযোগ করার চেষ্টা করলে যোগাযোগ করতে ব্যর্থ হয়।
পরবর্তীতে ভুক্তভোগী নিজেই বাদী হয়ে বোয়ালিয়া থানায় প্রতারণা আইনে একটি মামলা দায়ের করেন।
এ ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে পুলিশ ও অন্যান্য আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর ন্যায় র্যাবও ছায়া তদন্ত শুরু করে এবং আসামিকে গ্রেফতারের জন্য গোয়েন্দা নজরদারি শুরু করে।
শনিবার রাতে র্যাব-৫, সিপিএসসি ও র্যাব-১৩, সিপিসি-১ এর একটি চৌকস অভিযানিক দল সংঘবদ্ধ প্রতারণা চক্রের মূলহোতা ও পরিকল্পনাকারীকে আটক করে।
র্যাব-৫ রাজশাহীর উপ-পরিচালক মেজর আসিফ আল রাজেক বলেন, প্রাথমিক তদন্তে প্রতারণার সত্যতা পাওয়া গেছে এবং প্রতারক নিজেকে পুলিশের এসআই পরিচয় দিয়ে এর আগেও বহুবার মানুষকে প্রতারণা করে এসেছেন বলে স্বীকার করেছে। এভাবে সে অনেকের সার্টিফিকেট জালিয়াতি, আত্মসাৎ করার মাধ্যমে ব্লাকমেইলের সাথে জড়িত ছিল।
মিথ্যার আশ্রয় নিয়ে বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর সৈনিক পদে চাকরি দেওয়ার কথা বলে বিভিন্ন ভিকটিমের কাছ থেকে বিপুল পরিমাণ অর্থ হাতিয়ে নিয়ে এলাকার নিরীহ লোকজনকে নিঃস্ব করেছে মর্মে জানা যায়।
তাছাড়া আগে তার নামে একাধিক প্রতারণা আইনে মামলা রয়েছে এবং সে একাধিকবার জেলে গেছে। তাকে বোয়ালিয়া থানায় হস্তান্তর করা হয়েছে বলেও জানিয়েছেন র্যাবের এ কর্মকর্তা।