শনিবার (১৭ মে) দুপুরের দিকে বিষয়টি নিশ্চিত করেন মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সুধারাম থানার উপপরিদর্শক (এসআই) ফখরুল ইসলাম।
তিনি বলেন, গতকাল শুক্রবার এ ঘটনায় নারীও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ৭ ধারায় মামলা নেওয়া হয়েছে।
এর আগে, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রামের ফয়েজ মিস্ত্রি বাড়ি থেকে অপহরণের শিকার হন দুই বোন।
অপহৃতরা হলেন : এসএসসি পরীক্ষার্থী তাহরিম হারুন ফালাহ (১৫) ও তার ছোট বোন তাছনুবা হারুন তাহা (১২)।
ভুক্তভোগী দুই স্কুল ছাত্রীর মা ফরিদা আক্তার বলেন, তার বড় মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ পানা মিয়া টি.এফ উচ্চ বিদ্যালয়ের এসএসসি পরীক্ষার্থী ও ছোট মেয়ে তাছনুবা হারুন তাহা স্থানীয় খাদিজাতুল কোবরা মহিলা মাদরাসার সপ্তম শ্রেণির ছাত্রী। বড় মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ বিদ্যালয়ে যাওয়া-আসার পথে উপজেলার চর বাঞ্চারাম গ্রামের ওমর ফারুকের ছেলে সাজ্জাদুর রহমান শাওন তার মেয়েকে দীর্ঘদিন ধরে উত্ত্যক্ত করে আসছে।
বিষয়টি তিনি শাওনের দাদা, নানা ও পরিবারের সদস্যদের জানালেও তারা কোনো শাসন কিংবা ব্যবস্থা গ্রহণ করেননি। এতে শাওন আরও ক্ষুব্ধ হয়ে ওঠে।
তিনি জানান, গত ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় আমি ঘরের বাইরে অবস্থানের সুযোগে পূর্বের ঘটনার জেরে শাওন ও তার সহপাঠীরা আমার ঘরে ঢুকে দুই মেয়ে তাহরিম হারুন ফালাহ ও তাছনুবা হারুন তাহাকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরে বহু জায়গায় খোঁজাখুঁজি করে তাদেরকে না পেয়ে শাওনের পরিবারকে বিষয়টি জানালে তারা এই বিষয়ে কিছুই জানেন না বলে জানান।
ভুক্তভোগীদের মামা ওয়াহিদুর রহমান অপু বলেন, গত ২১ দিন ধরে আমার দুই ভাগ্নি অপহৃত অবস্থায় রয়েছে। আমরা থানায় অভিযোগ করার পরও পুলিশ তাদেরকে উদ্ধার করতে পারেনি। এই নিয়ে একাধিকবার পুলিশ অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওনের পরিবারের সঙ্গে থানায় বৈঠকও করেছে। কিন্তু কোনো সন্ধান বের করতে পারেনি। সর্বশেষ গতকাল বৃহস্পতিবার রাতে শাওনের পরিবারকে নিয়ে থানায় বৈঠক করলেও আমার ভাগ্নিদের কোনো তথ্য না পাওয়ায় থানা পুলিশ আমার বড় বোন ফরিদা আক্তার থেকে এজাহার গ্রহণ করার পর অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওনকে আটক করে।
অপহৃত ছাত্রীদের বাবা হারুন অর রশিদ বলেন, আমার বড় মেয়ে ফালাহ এসএসসি পরীক্ষার ৬টি বিষয় শেষ করে। ২৬ এপ্রিল সন্ধ্যায় পড়ার টেবিলে পরের দিনের পরীক্ষার প্রস্তুতি নিচ্ছিল ফালাহ। ওই সময় বখাটে শাওন ও তার সহপাঠীরা আমার বড় মেয়ের সঙ্গে ছোট মেয়েকেও অপহরণ করে নিয়ে যায়। জানি না আমার মেয়েরা কোথায় আছে, কেমন আছে। এখন তথ্যপ্রযুক্তির যুগ, কিন্তু ঘটনার ২১ দিন পেরিয়ে গেলেও পুলিশ এখনও আমার মেয়েদের উদ্ধার করতে পারেনি। আমি আমার মেয়েদের সন্ধান চাই।
সুধারাম মডেল থানার এসআই ফখরুল ইসলাম বলেন, এ ঘটনায় অভিযুক্ত সাজ্জাদুর রহমান শাওন (২০) নামে এক তরুণকে আটক করে বিচারিক আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। তদন্ত করে পরবর্তী আইনি ব্যবস্থা নেওয়া হবে।