অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টারা চাকরিজীবীদের মতো কাজ করছেন, তাদের কাজে বিপ্লবের গতিশীলতা নেই বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপির জ্যেষ্ঠ যুগ্ম মহাসচিব রুহুল কবির রিজভী।
তিনি বলেন, ‘(সরকার) জিনিসপত্রের দাম নিয়ন্ত্রণ করতে পারছে না। জনগণের দুর্ভোগ আগের মতোই রয়ে গেছে। দিনমজুর-শ্রমিকদের জীবনযাত্রা কঠিন হয়ে পড়ছে।’
শুক্রবার (২২ নভেম্বর) বিকেলে জাতীয়তাবাদী রিকশা-ভ্যান-অটোচালক দলের বিক্ষোভ সমাবেশে তিনি এসব কথা বলেন।
অন্তর্বর্তী সরকারকে জুলাই বিপ্লবে হতাহতদের পরিবারের দায়িত্ব নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে রিজভী বলেন, ‘আমি এবং বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাউদ্দিন আহমেদ কয়েকদিন আগে পঙ্গু হাসপাতালে গিয়েছিলাম। দেখলাম এখনো অনেকেই হাসপাতালে কাতরাচ্ছেন।
কারও পিঠের চামড়া খুলে গেছে, কারও পা নেই, কেউ কেউ অন্ধ হয়ে গেছেন। এদের দায়িত্ব কি রাষ্ট্র নেবে না? এদের দায়িত্ব তো রাষ্ট্রকেই নিতে হবে।’
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নরের উদ্দেশ্যে রিজভী বলেন, ‘আপনাকে মাঝে মাঝে দেখি আন্দোলনের যে স্পিড সেই স্পিড অনুযায়ী কথা বলেন, সেজন্য আপনাকে ধন্যবাদ। কিন্তু আপনার ওখানে কী হচ্ছে? কারা এরা? কারা এখানে এই নির্বাচন করছে? আবার তারা ফলাও করে বলছে তারা নাকি আওয়ামী লীগ সমর্থিত নীল দল সেখানে জিতেছে। ঘাপটি মেরে ব্যাংকের টাকা পাচারে এই লোকগুলোই জড়িত। এদের নিয়োগ দেওয়া হয়েছে ১৫-১৬ বছর ধরে। তারা এখনো ভেতরে থেকে ষড়যন্ত্র করছে। তাদের চিহ্নিত করে ব্যবস্থা নিচ্ছেন না কেন? এর কারণ কী?’
শেখ হাসিনার কঠোর সমালোচনা করে রিজভী বলেন, ‘শেখ হাসিনা মিথ্যাচার করে এখনো বলেন তিনি প্রধানমন্ত্রী, ডোনাল্ড ট্রাম্প নাকি বলেছেন হাসিনা এখনো বাংলাদেশের সরকারপ্রধান। শেখ হাসিনা জনগনের ৮০ শতাংশ টাকা (তার সমর্থকদের) লুট করার সুযোগ করে দিয়েছেন। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে আওয়ামী লীগ সরকার বলেছে- তোমরা ধরো মারো খাও, লুটপাট করো আর আওয়ামী লীগ সরকারকে ক্ষমতায় রাখো।’
তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা হত্যাকাণ্ড চালিয়ে মায়াকান্নার অভিনয় করতেন। ছাত্রলীগ ও যুবলীগকে হত্যার লাইসেন্স দেওয়া হয়েছিল।’
বিক্ষোভ সমাবেশে বিএনপি চেয়ারপারসনের বিশেষ সহকারী শামসুর রহমান শিমুল বিশ্বাস বলেন, শেখ হাসিনা ভারতে পালিয়ে থেকে দেশে অশান্তি সৃষ্টি করছেন। আওয়ামী লীগের বিচার বাংলার মানুষ দেখতে চায়।
সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন জাতীয়তাবাদী রিকশা-ভ্যান-অটোচালক দলের সভাপতি আলমগীর হোসেন মন্টু। এতে আরও বক্তব্য দেন- বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা আব্দুস সালাম, গবেষণা বিষয়ক সম্পাদক শামীমুর রহমান শামীম, নির্বাহী কমিটির সদস্য আব্দুর সাত্তার পাটোয়ারী, ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সদস্য সচিব তানভীর আহমেদ রবিন, অভিনেতা চৌধুরী মাজহার আলী (শিবা শানু) প্রমুখ।