বাংলাদেশ সম্মিলিত সনাতনী জাগরণ জোটের মুখপাত্র ও পুণ্ডরীক ধামের অধ্যক্ষ চিন্ময় কৃষ্ণ দাশ ব্রহ্মচারীকে গ্রেফতারের তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানিয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ। একই সঙ্গে অনতিবিলম্বে তার মুক্তি দাবি করেছে দলটি।
সোমবার (২৫ নভেম্বর) আওয়ামী লীগের ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে এক বিবৃতিতে এ প্রতিবাদ জানান দলটির সভাপতিমণ্ডলীর সদস্য অ্যাডভোকেট জাহাঙ্গীর কবির নানক।
বিবৃতিতে জাহাঙ্গীর কবির নানক বলেন, ১৯৭১ সালে সুমহান মুক্তিযুদ্ধে এ দেশের জাতি, ধর্ম, বর্ণ, শ্রেণি ও পেশা নির্বিশেষে সবাই অংশগ্রহণ করেছিল। মুসলমান-হিন্দু-বৌদ্ধ-খ্রিস্টানের সম্মিলিত রক্তের স্রোতধারায় বাংলাদেশ রাষ্ট্রের অভ্যুদয় ঘটে। স্বাধীনতা সংগ্রামে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের অংশগ্রহণ ও ত্যাগ অনস্বীকার্য। সেই মহান মুক্তিযুদ্ধের চেতনার আলোকে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ধর্মনিরপেক্ষ ও অসাম্প্রদায়িক বাংলাদেশ গড়ে তোলেন। কিন্তু সম্প্রীতির সেই বাংলাদেশ আজ হুমকির মুখে।
তিনি বলেন, বাংলাদেশকে এখন সাম্প্রদায়িক সহিংসতার জনপদে পরিণত করা হয়েছে। অগণতান্ত্রিক এই সরকার দায়িত্ব নেওয়ার পর সবার টুঁটি চেপে ধরার চেষ্টা করছে। রাজনৈতিক মতের পাশাপাশি ধর্মীয় বিশ্বাস ও মত প্রকাশ এবং আচার-অনুষ্ঠানের ওপর এক অলিখিত নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেছে। কোনো সম্প্রদায়ের মানুষের জীবন আজ বাংলাদেশে নিরাপদ নয়। সর্বত্র সাম্প্রদায়িকতার বিষবাষ্প ছড়ানো হচ্ছে।
নানক অভিযোগ করেন, এই সরকারের প্রত্যক্ষ মদতে সনাতনী ধর্মাবলম্বীসহ বৌদ্ধ-খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মীয় প্রতিষ্ঠানে হামলা, ভাঙচুর, লুটপাট, অগ্নিসংযোগ ও নির্বিচারে তাদেরকে হত্যা করা হয়। যা গণহত্যার শামিল।
ভিন্ন ধর্মাবলম্বীরা, বিশেষ করে সনাতনী ধর্মাবলম্বীরা এর প্রতিবাদ করার জন্য ঐক্যবদ্ধ হয়। তাদের সুরক্ষা নিশ্চিত করার জন্য সরকারের প্রতি বিভিন্ন দফা সম্বলিত দাবি জানায়। কিন্তু ইউনূস সরকার সেদিকে ভ্রুক্ষেপ না করে দমন-পীড়নের পথ বেছে নেয়। এরই অংশ হিসেবে আজ হযরত শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সনাতন ধর্মাবলম্বীদের নেতা চিন্ময় কৃষ্ণ দাশকে গ্রেফতার করা হয়েছে। কোনো সভ্য রাষ্ট্রে বিমানবন্দর থেকে কাউকে এভাবে গ্রেফতারের ঘটনা নজিরবিহীন। তাকে এভাবে গ্রেফতার করায় আমরা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের পক্ষ থেকে গভীর উদ্বেগের সঙ্গে তীব্র নিন্দা ও প্রতিবাদ জানাচ্ছি। অনতিবিলম্বে তার নিঃশর্ত মুক্তি দাবি করছি।