অন্তর্বর্তী সরকারের পক্ষ থেকে সোমবার (০২ জুন) অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট প্রস্তাব উপস্থাপন করেন। এসময় তিনি এ তথ্য জানান।
চলতি বছরের জানুয়ারিতে সিগারেটের চারটি স্তরে দাম ও শুল্ক উভয়ই বাড়ানো হয়েছিল। তখন নিম্ন, মধ্যম ও উচ্চ স্তরের ১০ শলাকা সিগারেটের ওপর সম্পূরক শুল্ক ৫ থেকে ৭ শতাংশ পর্যন্ত বাড়ানো হয়। সে কারণে প্রস্তাবিত বাজেটে সিগারেটের শুল্ক কাঠামোয় নতুন করে পরিবর্তন আনা হচ্ছে না।
প্রস্তাবিত বাজেটে বলা হয়েছে, সিগারেট, জর্দা, গুল ইত্যাদি জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর। এসব পণ্য আমদানির ক্ষেত্রে উচ্চহারে শুল্ক আরোপিত আছে। অন্যদিকে তামাক বীজ আমদানিতে প্রযোজ্য কাস্টমস ডিউটি ০%, যা সামঞ্জস্যপূর্ণ নয়।
জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকর বিবেচনায় তামাক চাষকে নিরুৎসাহিত করার লক্ষ্যে আগের এইচএস কোড বিভাজন করে তামাক বীজের জন্য নতুন এইচএস কোড সৃজন করা হবে, যা আমদানিতে ২৫ শতাংশ কাস্টমস ডিউটি আরোপ করা যায়।
আরেক প্রস্তাবে বলা হয়, তামাকজাতীয় পণ্যের শুল্ক ফাঁকি সংক্রান্ত বিষয়ে গঠিত তদন্ত কমিটি একটি তদন্ত প্রতিবেদন দাখিল করেছে। প্রতিবেদনে সিগারেট উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানে ব্যবহৃত উপকরণ বা কাঁচামাল বাণিজ্যিকভাবে আমদানি নিরুৎসাহিত করার বিষয়ে বলা হয়েছে।
ওই প্রতিবেদন অনুযায়ী সিগারেট উৎপাদনে ব্যবহৃত কাঁচামাল আমদানিতে বিদ্যমান শুল্ক-কর হার উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের তিনগুণ করার প্রস্তাব করা হয়েছে।
ওই সুপারিশের পরিপ্রেক্ষিতে সিগারেট উৎপাদনের মূল্য কাঁচামাল পেপার আমদানি উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে ১০০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক নির্ধারণ করার সিদ্ধান্ত হয়েছে।
সেক্ষেত্রে বাণিজ্যিক আমদানিকারকদের জন্য পেপার আমদানিতে ৩৫০ শতাংশ সম্পূরক শুল্ক আরোপ করা যেতে পারে। একই সঙ্গে অন্য একটি কাঁচামাল অ্যাসিটেট টো এবং অ্যাসিটেট ফিল্টার রড আমদানির ক্ষেত্রে উৎপাদনকারী প্রতিষ্ঠানের ক্ষেত্রে কোনো সম্পূরক শুল্ক আরোপিত নেই
উল্লেখ্য, বাংলাদেশে প্রায় ৩ কোটি ৭৮ লাখ প্রাপ্তবয়স্ক ব্যক্তি ধূমপান বা ধোঁয়াবিহীন তামাক ব্যবহার করেন।
প্রতিবছর তামাকজনিত রোগে মৃত্যু ঘটে ১ লাখ ৬১ হাজারের বেশি মানুষের। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে তামাক ব্যবহারের ফলে অর্থনৈতিক ক্ষতির পরিমাণ ছিল প্রায় ৩০ হাজার ৫৬০ কোটি টাকা। যা চিকিৎসা ব্যয় ও উৎপাদনশীলতা হ্রাসের সম্মিলিত ফল।