রোববার (২৩ মার্চ) দুপুরে নির্বাচন ভবনে নিজ দফতরে সাংবাদিকদের নানা প্রশ্নের জবাবে এমন মন্তব্য করেন তিনি।
তিনি বলেন, আমরা ৩ লাখ ৭৮ হাজারের একটা আবেদন তিন মাসের ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে শেষ করার একটি বিষয় আপনাদের বলেছিলাম। আমরা যেদিন বলেছিলাম তারপর আমাদের একটা প্রক্রিয়া ছিল। সেগুলো শেষ করে যখন আমরা কাজ শুরু করতে যাই তখন ২৯ ডিসেম্বর। ইতোমধ্যে আড়াই মাস পার হয়ে গেছে। গত ১৬ মার্চ পর্যন্ত হিসাব অনুযায়ী, আমরা ২ লাখ ৭৮ হাজার আবেদন শেষ করতে পেরেছিলাম আগের আবেদনসহ। ইতোমধ্যে আমাদের কাছে আরও ৩ লাখ ২ হাজার আবেদন জমা পড়ে। এ নিয়ে এখন পর্যন্ত প্রক্রিয়াধীন আবেদন আছে ৪ লাখের মতো যা আগামী ৬ মাসের মধ্যে শেষ করা সম্ভব।
এনআইডি সংশোধনের ধীরগতির কারণ উল্লেখ করে তিনি বলেন, মাঠে এখন ভোটার নিবন্ধনের কাজ চলছে। অফিসাররা এ কাজে বেশ ব্যস্ত। ২২ মার্চ পর্যন্ত, ৪৭ লাখ ৫৪ হাজার ভোটারের নিবন্ধন হয়েছে। ভোটার নিবন্ধনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে কর্মকর্তারা এনআইডি আবেদনের কাজে মন দিতে পারেননি।
ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ হবে ৫ মে। ৫ মে পর্যন্ত ব্যস্ত অফিসাররা। এই ব্যস্ততার কারণে এনআইডি সংশোধনে মনযোগ দিতে পারিনি। এই জন্য সিদ্ধান্ত হয়েছিল যে, আগে ভোটার নিবন্ধনের কাজ শেষ হোক। যখন ভোটার নিবন্ধনের কাজটা কমে আসবে তখন আমরা পুরো মনযোগ সেখানে দিতে পারব।
চলমান এনআইডি’র ক্রাশ প্রোগ্রামের বিষয়ে তিনি বলেন, এরইমধ্যে আমরা ২ লাখ ৭৮ হাজার আবেদনের কাজ শেষ করায়, আমাদের আত্মবিশ্বাস জন্মেছিল যে জুনের মধ্যে কাজটা শেষ করতে পারব। এর মধ্যে যেসব আবেদন জমা পড়বে, তার কিছু হয়তো থেকে যাবে। কারণ, আমরা জনবল বাড়াতে পারব না।
যে গতিতে আবেদন নিষ্পত্তি হচ্ছে, আমার কেনো জানি মনে হচ্ছে, এই গতিতে কাজ হলে আমরা জনভোগান্তি কমাতে পারব। ক্রাশ প্রোগ্রামের মাধ্যমে জানুয়ারি, ফেব্রুয়ারি, মার্চে শেষে ১ লাখ আবেদন সংশোধন করতে পারি। আমরা অনুমান করছি, কাছাকাছি সংখ্যার আবেদন আমরা শেষ করতে পারব। হয়তো পুরোটা পারব না। ভোটার রেজিস্ট্রেশনের কাজে ব্যস্ত থাকার কারণে।
এনআইডি সংশোধনের জন্য কাঠামোবদ্ধ কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, নির্বাচনি কর্মকর্তাদের প্রতিবেদন তৈরিতে আমরা তিনটি ক্যাটাগরিতে ছক তৈরি করেছি। একটি ছক বিদেশে থেকে ভোটার হচ্ছেন, আরেকটি ছক চাকরিজীবীদের জন্য এবং তৃতীয় ছকটি সাধারণ মানুষর জন্য। প্রত্যেক জেলা-উপজেলায় যেন নিয়মিত এনআইডি আবেদন সংশোধনের প্রক্রিয়া পর্যবেক্ষণ করা যায়, সেই সিস্টেম ডেভেলপ করা হচ্ছে।
এনআইডি সংশোধনের কাজে আর্থিক লেনদেনের অভিযোগ এসেছে কিনা জানতে চাইলে এনআইডি ডিজি বলেন, কিছু কিছু জায়গায় এই চক্র কাজ করছে। কেউ কেউ টাকাপয়সা নিয়েছে এমন আবেদনও আমি পেয়েছি। এক্ষেত্রে আমরা ডিবিকে কাজে লাগিয়েছি এবং তাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। ঠাকুরগাঁয়ে আমাদের একজন ডাটা এন্ট্রি অপারেটরকে ধরা হয়েছে এবং তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে। নরসিংদীতে দু’জনের বিরুদ্ধে মামলা করা হয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।
সর্বশেষ হালনাগাদের তথ্য অনুযায়ী, বর্তমানে দেশে মোট ভোটার সংখ্যা দাঁড়াল ১২ কোটি ৩৭ লাখ ৩২ হাজার ২৭৪ জন। বাড়ি বাড়ি গিয়ে ভোটার তালিকা হালনাগাদ চলমান রয়েছে। এতে আরও প্রায় ৫৭ লাখ ভোটার আগামী জুনে তালিকায় যুক্ত করার পরিকল্পনা নিয়ে এগুচ্ছে ইসি।