স্টাফ রিপোর্টার : চট্টগ্রামের পটিয়ায় বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের নেতাকর্মীদের সঙ্গে পুলিশের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। এতে পুলিশসহ অন্তত ২৩ জন আহত হয়েছেন।
মঙ্গলবার (১ জুলাই) রাত সাড়ে ৯টা ও রাত সাড়ে ১২টার দিকে পটিয়া থানার সামনে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, মঙ্গলবার রাতে জুলাই দিবস উপলক্ষে মোমবাতি প্রজ্বলনের কর্মসূচি শেষে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের কর্মীরা রাঙামাটি জেলা ছাত্রলীগের নেতা দীপংকর দে-কে দেখতে পেয়ে তাকে আটক করে পটিয়া থানা চত্বরে নিয়ে আসে। তবে ওই নেতার নামে কোনো মামলা না থাকায় তাকে আটক করতে চায়নি পুলিশ। এ নিয়ে আন্দোলনকারীদের সঙ্গে পুলিশের উত্তেজনা দেখা দেয় এবং এক পর্যায়ে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
আহত ছাত্র আশরাফুল ইসলাম তৌকির বলেন, ‘আমরা শান্তিপূর্ণভাবে প্রতিবাদ করছিলাম। দীপংকর দে-কে পুলিশকে বুঝিয়ে দিচ্ছিলাম। কিন্তু হঠাৎ কোনো কারণ ছাড়াই পুলিশ আমাদের ওপর লাঠিচার্জ শুরু করে।
বৈষম্যবিরোধী আন্দোলনের দক্ষিণ চট্টগ্রাম অঞ্চলের সমন্বয়ক গোলাম মওলা মাশরাফ বলেন, ‘পুলিশ এখন বট, দুই নম্বর আর ফাও হয়ে গেছে। চাঁদাবাজ, সন্ত্রাসীদের রক্ষা করছে আর নিরীহ ছাত্রদের পেটাচ্ছে। আমরা মৃত্যুকে ভয় পাই না। এই বিপ্লব মরার জন্যই করছি।’
তিনি আরও অভিযোগ করেন, ‘চিহ্নিত সন্ত্রাসীদের ধরতে ব্যর্থ পুলিশ এখন আন্দোলনকারীদের হুমকি দিচ্ছে। তবে আমরা থেমে থাকবো না।’
পটিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের জরুরি বিভাগের চিকিৎসক ডা. মো. নওশাদ জানান, দুই দফায় মোট ২১ জন ছাত্র এখানে প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে। দ্বিতীয় দফার আহতরা তুলনামূলক বেশি গুরুতর। এছাড়া পুলিশের দুজন সদস্য হাতে সামান্য আঘাত পেয়ে তারাও প্রাথমিক চিকিৎসা নিয়েছে।
পটিয়া থানার ওসি আবু জায়েদ মো. নাজমুন নুর জানান, ছাত্রদের ওপর কোনো লাঠিপেটা করা হয়নি। তারা থানায় এসে উচ্ছৃঙ্খল আচরণ করে এবং স্লোগান দেয়। পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করতে পুলিশ তাদের ধাওয়া দিলে তারা দৌড়ে পালানোর সময় পড়ে গিয়ে কিছু আহত হয়।
এদিকে ঘটনার পর রাতে এক জরুরি সংবাদ সম্মেলন করেছে পটিয়ার বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন। এতে সংগঠনের নেতা হাসান আল বান্না, রিদুয়ান সিদ্দিকী, মাহবুব উল্লাহ, গোলাম মাওলা মাশরাফ, রাকিবুল হক হেলালি, সাজ্জাত হোসেন, গাজী আবুল হাসনায় জুবায়ের, সাইফুল, আকরাম, সাইফুল ইসলাম রাব্বি, সাইদুল ইসলাম, শওকত ইসলাম প্রমুখ বক্তব্য দেন।
তারা পটিয়া থানার ওসি ও সংশ্লিষ্ট এসআইদের অপসারণ, অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ এবং ঘটনার নিরপেক্ষ তদন্ত ও বিচার দাবি জানান।
নেতারা হুঁশিয়ারি দিয়ে বলেন, এই ঘটনার বিচার না হলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দিতে বাধ্য হবো।